মাছের ঘের দখলে বাধা দেয়ায় ওয়ার্ড বিএনপি নেতাকে মারপিট, দড়ি দিয়ে বেধে চুরির অপবাদ দিয়ে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় খুলনা সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছে ভুক্তভোগী। খুলনা সাইবার ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত মামলা নং ৭৮/২৩ এ বাদী ৪জনকে আসামী করেছেন।
আসামীরা হলেন লিটন রায় (৪২), সুমন (৪০), ফারুক মীর (৪০) ও মিলন গাজী (৪৩)। মামলার এজাহারে ২৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক, মৎস্য ও ইট বালু ব্যবসায়ী শেখ খাইরুল ইসলাম হিরু উল্লেখ করেন ২০২০ সালের ১৭ মে তারিখে ৩০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ৩ বছর মেয়াদী লীজ ঘের চুক্তিপত্র করে বটিয়াঘাটার শৈলমারী মৌজায় শাহ আলমের জমিতে মৎস্য চাষ শুরু করেন। ২০২১ ও ২০২২ সালে কোনরূপ ঝুট-ঝামেলা ছাড়াই বাদী মাছ চাষ শুরু করেন। ২০২৩ সালের প্রথম দিকে ঘেরে মাছ চুরি হওয়ার কারণে বাদী তার মা ও বোনকে নিয়ে ওই ঘেরে একটি টিনসেড ঘরে অবস্থান করেন।
চলতি বছর জানুয়ারির প্রথম দিকে ২নং আসামী সুমন বাদীকে হুমকি দিয়ে বলেন “এই ঘেরের লিজের মেয়াদ শেষ হলে তুই ঘের ছেড়ে দিবি। যেহেতু এই ঘেরের সাথে আমার নিজের জমি আছে, এই ঘেরের ডিডের মেয়াদ শেষে আমি ঘের করব।” তখন বাদী জানায় “ঘেরের জমির মালিক যাকে ঘের দেবে সে করবে।” দু-এক কথায় বাদী ও আসামী সুমনের সহিত বাকবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় আসামী সুমন সন্ত্রাসী লোকজনকে সাথে নিয়ে বাদীর মা ও বোনকে ঘের ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি প্রদান করে আসছেন। আসামী সুমন সহ স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ঘেরের জমির মালিক স্বাক্ষী শাহ আলমকেও বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করায় বাদীকে নতুন করে ডিড নবায়ন করতে জমির মালিক অস্বীকৃতি জানায়। তবে ঘেরের রক্ষিত মাছ না ওঠা পর্যন্ত ১৭ মে তারিখ চুক্তির মেয়াদ শেষ হইলেও মৌখিকভাবে আরো ২/৩ মাস বাদীকে সময় প্রদান করেন। ওই সময় শেষ হওয়ায় গত ২৪ জুলাই বাদী জেলেদের সাথে নিয়ে তার ঘেরের মাছ ধরার জন্য রাত্র অনুমান ৯টা মাছ ধরতে থাকেন। রাত্র অনুমান ১২টার দিকে আসামীগণ অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ জন রামদা, শাবল, বাশের লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হইয়া ঘের ঘিরে ফেলে এবং গালিগালাজ করে পটকা ফুটাইয়া জেলের মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। ঘের থেকে সংগৃহীত অনুমান ৫০০ পিস ভেটকি মাছ যার মূল্য অনুমান ৩ লাখ টাকা ভ্যানে করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক নিয়ে যায়। বাদী বাধা দিলে আসামী সুমন তাহাকে তাড়া করে ঘেরের পাড়ে কাদার মধ্যে ফেলে পাড়িয়ে ধরে। আসামী ফারুক মীর, মিলন কাজী বাশের লাঠি দিয়ে বাদীকে নির্দয়ভাবে মেরে অর্ধমৃত অবস্থায় ঘেরের পাড়ে বেল গাছের গোড়ায় পিঠ মুড়া দিয়া চোরের মত বেধে ফেলে। ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করে দেয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. তৌহিদুর রহমান তুষার বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫ (২) ও ২৯(২) ধারায় খুলনা সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। আদালত মামলা গ্রহণ পুর্বক পিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি