বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স রাজনীতিতে সংজ্ঞাতময় পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান সংকট থেকে দেশ ও মানুষকে মুক্তি পেতে চলতি ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। তিনি বর্তমান সংকট উত্তরণে “আগামী সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হবে” এই ঘোষণা দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখনই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকী সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করুন।
কমরেড রতন সেনের ৩১তম হত্যাবার্ষিকীতে খুলনা জেলা সিপিবি আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতি দ্বি-দলীয় ধারা বিপরীতে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তোলার আহবায়ন জানিয়ে বলেন, দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে ব্যবস্থা বদল ছাড়া মানুষের মুক্তি নেই। সরকারের দায়িত্বহীন আচরণের কারণে আজ বিদেশী সাম্প্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তি দেশে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছে। তিনি সরকারে দুঃশাসন ও দেশী-বিদেশী লুটেরা-আধিপত্যবাদী শক্তি বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান। পদ্ম সেতু হোল অথচ খালিশপুর, রূপসার কলাকারখানা বন্ধ হোল। শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি এলো না, দক্ষিণাঞ্চলের বঞ্চনা দূর হলো না। এ অবস্থার অবসানে তিনি যার যার দাবীতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সিপিবি খুলনা জেলা কমিটির উদ্যোগে শহীদ হাদিস পার্কে বিকেল ৪টায় জেলা সভাপতি ডাঃ মনোজ দাশের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এ রশীদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল হান্নান, মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, সাধারণ সম্পাদক এড. নিত্যানন্দ ঢালী, জেলা সম্পাদকম-লীর সদস্য বটিয়াঘাটা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই গাইন, এড. এম এম রুহুল আমিন, বটিয়াঘাটা উপজেলা সভাপতি অশোক সরকার, দাকোপ উপজেলা সভাপতি কিশোর রায়, টিইউসি জেলা সভাপতি এইচ এম শাহাদাৎ, ডুমুরিয়া উপজেলা সভাপতি এড. চিত্তরঞ্জন গোলদার, শাহীনা আক্তার, মহানগর সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. মোঃ বাবুল হাওলাদার, সিপিবি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কিংশুক রায়, সমীরন গোলদার, প্রশান্ত ম-ল, গাজী আফজাল, মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিতাই পাল, অধ্যাপক সঞ্জয় সাহা, সুখেন রায়, আব্দুল হালিম, এস এম চন্দন, হুমায়ুন কবির, শ্রমিকনেতা আব্দুর রহামন মোল্লা, মিনু পাল, দিপু ম-ল, যুবনেতা ধীমান বিশ্বাস, আফজাল হোসেন, মৌফারসের আলম লেনিন, সৈয়দ রিয়াত আলী রিয়াজ, ছাত্র নেতা সৌরভ সমাদ্দার, সৌমিত্র সৌরভ প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে রুহিন হোসেন প্রিন্স কমরেড রতন সেনের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পা স্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কমরেড রতন সেনের হত্যাকারী ও মদতদাতারা চিহ্নিত হওয়ার পরও তাদের বিচার না হওয়া দুঃখজনক। তিনি হত্যা মামলার পুনঃ তদন্ত ও বিচার দাবী করেন বলেন হত্যাকালীদের ক্ষমা নেই। তিনি বলেন, কমরেড রতন সেনের এই সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তন করে সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন। তাঁর সংগ্রাম ছিল অসাম্প্রদায়িকতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, লুটপাটকারী-দুর্নীতিকারীদের বিরুদ্ধে। এই দুর্বৃত্তায়িতচক্রই কমরেড রতন সেনকে ১৯৯২ সালে এই দিনে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, কমরেড রতন সেনের আদর্শের মৃত্যু নেই। আমরা এই আদর্শ বাস্তবায়ন করে তাঁর হত্যার প্রতিশোধ নেবো। পরিশেষে এক লাল পতাকার মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
খুলনা গেজেট/কেডি