নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার লক্ষ্যে সরকারকে এখনই পদত্যাগ করার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এখনও সময় আছে, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমেই আপনাদের পতন হবে।
সোমবার (৩১ জুলাই) বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গুগলিতে ব্যাটসম্যান যেমন কিছু বুঝে ওঠার আগে আউট হয়ে যায়, বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচিতে (২৮ ও ২৯ জুলাই) আওয়ামী লীগের একই অবস্থা হয়েছে। বিএনপির গুগলিতে আওয়ামী লীগ বোল্ড আউট হয়ে গেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা ক্রিকেট খেলা দেখেন? আমাদের সাকিব খুব ভালো ব্যাটসম্যান। তিনি কিন্তু আবার স্পিন বলও করেন। স্পিন বলের আরেকটা রূপ আছে গুগলি। আজকে বিএনপির গুগলিতে আওয়ামী লীগ পুরো বোল্ড আউট হয়ে গেছে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তাদের বলেছেন, আপনারা ভয় পাবেন না। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি। তার মানে কী? তার মানে তারা ভয় পেয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা ছোট্ট একটা কর্মসূচি দিয়েছিলাম ঢাকার প্রবেশ পথে অবস্থান। তারা এমন ভয় পেলো, পুলিশ বাহিনী, দলীয় গুন্ডা বাহিনী নিয়ে যুদ্ধাবস্থা তৈরি করে ফেললো। একজন মুক্তিযোদ্ধা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষসহ সারাবিশ্ব তা দেখেছে। তারপর আবার নাটক করে গল্প সাজিয়েছে। এতে কি গয়েশ্বর বাবু ছোট হয়েছে? না ছোট হয়েছে সরকারের লোকজন। তাদের পায়ের তলে মাটি নেই। এজন্য তারা এমন নাটক করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সরকারের দেশে বিদেশে কোনো সমর্থন নেই। দুই বার চুরি করে, মানুষকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। এখন আবার বলে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। এবার আর তা হবে না। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।
ফখরুল বলেন, আমরাও নির্বাচন চাই। তবে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন চাই না। আমরা জাতীয় ঐক্য তৈরি করেছি। সেই ঐক্য হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন দিতে হবে। এখনও সময় আছে, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। দেশের মানুষের চাহিদাকে পূরণ করুন।
সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নেতৃত্ব কে দেবে এটি আদালতের সিদ্ধান্ত নয়। বাংলাদেশের নেতৃত্ব কে দেবে তা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সিদ্ধান্ত নয়। বাংলাদেশের নেতৃত্বে কে দেবেন সেই সিদ্ধান্ত নেবে এই দেশের জনগণ।
সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন বর্তমান সরকার একটি এক দলীয় সরকার। তারা দেশে অলিখিত বাকশাল কায়েক করেছে। তারা যা খুশি তাই করছে। গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়েছে। এই সরকার হলো ধোঁকাবাজির সরকার। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে স্বৈরাচার কায়েম করেছে। মির্জা আব্বাস বলেন, যতোই চেষ্টা করা হোক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। যতোই গ্রেপ্তার করা হোক সরকার পতনের আন্দোলন আর ঠেকানো যাবে না। সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।
খুলনা গেজেট/এমএম