সাতক্ষীরার স্থানীয় ক্লাব ওয়ারিয়র স্পোর্টস একাডেমীর পৃষ্ঠপোষকতায় ও বসুন্ধরা কিংস এর সহযোগিতায় শুক্রবার (২৮ জুলাই) সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ওয়ারিয়র স্পোর্টস একাডেমী ফুটবল চাম্পিয়নশীপ ২০২৩। এই টুর্ণামেন্টে পৃথকভাবে পুরুষ অনুর্ধ ১৭ এর চার টি এবং চারটি মহিলা ফুটবল টিম অংশ নিচ্ছে।
টুর্ণামেন্টের পুরুষ অনুর্ধ-১৭ এর উদ্বোধনী খেলায় অংশ গ্রহণ করে আরামবাগ ফুটবল একাডেমী ঢাকা ও ঝিকরগাছা স্পোর্টস ক্লাব যশোহর। শুক্রবার বেলা আড়াইটায় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এই টুর্ণামেন্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবির। উদ্বোধনী খেলায় আরামবাগ ফুটবল একাডেমী ১-০ গোলে ঝিকরগাছা স্পোর্টস ক্লাবকে হারিয়ে টুর্ণামেন্টে শুভ সুচনা করে।
এদিকে বিকাল ৪টায় একই ভেন্যুতে শুরু হয় মহিলা ফুটবল দলের খেলা। নারীদের চারটি দল এই টুর্ণামেন্টে অংশ গ্রহণ করছে। খেলা পরিচালনা করছেন আন্তর্জাতিক রেফারী সালমা খাতুন। টুর্ণামেন্টে অংশগ্রহণকারি চারটি মহিলা ফুটবল দলে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের ৮জন খেলোয়াড় এই টুর্ণামেন্টের চারটি দলে পৃথকভাবে খেলছেন। এসব খেলোয়াড়রা বুধবার দুপুরের দিকে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা এসে পৌছান। এদের মধ্যে ৭ জন সাতক্ষীরা শহরের অদূরে খড়িবিলাস্থ মোজাফ্ফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টে রাত্রি যাপন করেন। টুর্ণামেন্ট শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সেখানেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এছাড়া জাতীয় দলের হয়ে খেলা স্থানীয় খেলোয়াড় মাছুরা পারভিন নিজ গ্রামের বাড়ী শহরের উপকন্ঠে বিনেরপোতা এলাকায় তার পরিবারের সাথেই থাকছেন।
জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অংশগ্রহনকারী খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন শামছুন্নাহার সিনিয়র, শামছুন্নাহার জুনিয়র, তহুরা, মারিয়া, রুপনা চাকমা, মাতসুসিমা সুমাইয়া, মাসুরা পারভিন ও মার্জিয়া। মহিলাদের ৪টি দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত টুর্ণামেন্টের প্রতিটি দলে ২জন করে জাতীয় দলের খেলোয়াড় অংশ গ্রহণ করছে। এদের মধ্যে সাতক্ষীরা স্পোর্টস একাডেমীতে মাসুরা পারভিন ও মার্জিয়া, সাতক্ষীরা লেকভিউ সিটিতে শামছুন্নাহার সিনিয়র ও শামছুন্নাহার জুনিয়র, এ. আর. স্পোর্টিং ক্লাবে মারিয়া মান্ডা ও মাতসুসিমা সুমাইয়া এবং চিংড়ি বাংলা ক্লাব সাতক্ষীরাতে রুপনা চাকমা ও তহুরা খেলছেন।
এদিকে টুর্ণামেন্ট উপলক্ষে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুনও সাতক্ষীরায় আসেন আরো কয়েকদিন আগে। তিনি সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল মধুমল্লারডাংগি এলাকায় তার নিজের বাড়িতে উঠেছেন। তবে তিনি বেশিরভাগ সময় কাটাচ্ছেন ঢাকা থেকে আগত অতিথি খেলোয়াড়দের সঙ্গে। তিনি কোন খেলায় অংশ গ্রহণ করবেন না বলে জানা গেছে। টুর্ণামেন্টের কোন খেলায় অংশ না নিলেও টুর্ণামেন্টটি সফল ভাবে বাস্তবায়নে অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। আয়োজক, বিভিন্ন দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনায় সাবিনা খাতুন নিজেকে সারাক্ষন ব্যস্ত রাখছেন।
এদিকে শুকবার বিকাল ৩টায় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামের গ্যালারীতে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা হয় জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুনের। জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত এই টুর্ণামেন্ট খেলতে বাফুফের অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার এখন তার সময় নেই। আরো প্রশ্ন করার আগেই তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। এরপরও একাধিকবার তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি কোনভাবেই এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
বিকালে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে সাতক্ষীরা লেকভিউ সিটি ও এ.আর. স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার মহিলা ফুটবল দলের প্রথম খেলা অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী খেলায় এ.আর. স্পোর্টিং ক্লাব ৬-২ গোলে জয়লাভ করে। খেলার প্রথমার্ধে লেকভিউ সিটি’র শামছুন্নাহার জুনিয়র প্রথমে গোল করে দলকে ১-০ তে এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু কিছুক্ষন না যেতেই প্রতিপক্ষের মারিয়া মান্ডা একটি গোল করে খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লকভিউ সিটি’র শামছুন্নাহার সিনিয়র আরো একটি গোল করে দলকে ২-১ এগিয়ে নেয়। খেলার দ্বিতীয়ার্ধের বেশ কিচু সময় পর গোল উৎসবে মেতে উঠে এ. আর. স্পোর্টিং ক্লাবের স্বপ্না ও মাতসুসিমা সুমাইয়ারা। পর পর আরো ৫টি গোল করে খেলায় ৬-২ ব্যবধানে জয়লাভ করে এ. আর. স্পোর্টিং ক্লাব। দলের পক্ষে মাতসুসিমা সুমাইয়া ও স্বপ্না ২টি করে এবং মারিয়া মান্ডা ও অপর এক খেলোয়াড় ১টি কওে গোল করে।
খুলনা গেজেট/এসজেড