খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস আগেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর পদত্যাগের মধ্যদিয়েই জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। তারপরই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সব দলের অংশ গ্রহণে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা সংঘাত চাই না, দেশবাসী সংঘাত চাই না। সংঘাত থেকে উত্তোরণে এই সরকারের পদত্যাগের কোন বিকল্প পথ নেই। যদি সংঘাত না চান- তাহলে পদত্যাগ করে দেশকে সংঘাতমুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করতেও তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর নিউ মার্কেট সংলগ্ন বায়তুন নূর জামে মসজিদ চত্বরে অনুষ্ঠিত দলের খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি রোধ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, গ্রেফতারকৃত আলেম-উলামা ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং জাতীয় সংকট উত্তোরণসহ ৮ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিস খুলনা বিভাগের পক্ষ থেকে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজনের তত্বাবধায়ক মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের আরও বলেন, দেশ আজ এক মহাসংকটে পড়েছে। একদলীয় শাসনে সাধারণ মানুষ শোষিত হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের চরম উর্দ্ধগতি সরকার রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃস্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে বাঁচাতে হবে। কঠোর আন্দোলনের মধ্যদিয়ে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে জনতার সরকার ও ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখনও সময় আছে- পদত্যাগ করুণ। পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।
সভাপতির বক্তব্যে দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজনের তত্বাবধায়ক মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি রোধ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, গ্রেফতারকৃত আলেম-উলামা ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং জাতীয় সংকট উত্তোরণসহ ৮ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিস সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশ করছে। খুলনায় নবম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো।
তিনি বলেন, খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ করার জন্য নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বর এবং ডাকবাংলা চত্বর ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে খুলনার পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে এ দুটি স্থানের কোনটিতে তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হলে বায়তুন নূর মসজিদ চত্বরে সমাবেশ করতে হয়েছে। যে কারণে সকল প্রস্তুতি থাকা স্বত্বেও পরিপূর্ণ আয়োজন সম্ভব হয়নি। তারপরও বৈরি আবহাওয়াসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্থান থেকে দলীয় নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ সমাবেশে অংশ নেওয়ায় শুকরিয়া আদায় করেন তিনি।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, দলের নায়েবে আমীর অধ্যাপক সিরাজুল হক, দলের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ ও কেন্দ্রীয় পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক একেএম মাহবুব আলম। উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মুফতি আব্দুল হামিদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হাফেজ মাওলানা আফতাব উদ্দিন, সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মাওলানা নাসির উদ্দিন, খুলনা জোন পরিচালক ডাক্তার মোঃ আসাদুল্লাহ, কুষ্টিয়া জোন পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা সভাপতি মাওলানা আমিরুল ইসলাম, খুলনা জেলা সভাপতি মাওলানা এমদাদুল হক, নড়াইল জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল হান্নান সরদার, চুয়াডাঙ্গা জেলা সভাপতি মাওলানা মনিরুজ্জামান, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল হাসান, খুলনা মহানগর সভাপতি মাওলানা আলী আহমদ, যশোর জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ, মেহেরপুর জেলা সভাপতি মুফতি সাদিকুর রহমান ও খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা আব্দুল্লাহ যোবায়ের, মাওলানা শফিকুল ইসলাম ইসলাম, এ্যাড. শহিদুল ইসলাম, হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন, জামান বিন রায়হান, মোঃ আকরামুল ইসলাম, হাঃ শোয়াইব আহমেদ, শেখ মিজানুর রহমান, ইমদাদুল্লাহ আজমী ডালিম, মাওলানা ফয়জুল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা সাজ্জাদুল্লাহ রায়হানী, মোঃ মামুনুর রশীদ, মাওলানা আজিজুর রহমান, মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ, মাসুম বিল্লাহ প্রমূখ। এছাড়াও দলের বিভিন্ন জেলা নেতৃবৃন্দ এবং শীর্ষ উলামায়ে কেরাম বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বায়তুন নূর মসজিদ চত্বর থেকে ডাকবাংলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদ