বন্ধুত্বের আবহের মাঝে লড়াইয়ের ঝাঁঝ কতটা থাকবে? প্রশ্নটি অস্বাভাবিক নয়। নিজেদের মধ্যেই গড়া তিন দল, ম্যাচ অনুশীলন যেখানে মূল ভাবনা, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেটের আশা সেখানে কমই থাকে। তবে তিন অধিনায়ক তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ ও নাজমুল হাসান শান্তর কণ্ঠে লড়াই জমিয়ে তোলার প্রত্যয় ঠিকই শোনা গেল। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের পাশাপাশি তিন অধিনায়কেরই চাওয়া প্রেসিডেন্ট’স কাপের শিরোপা জয়।
তামিম ইকবাল : “আমাদের দল ভালো। আসলে দলের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো মাঠে কে কেমন পারফর্ম করে। কিছুটা ‘যদি-কিন্তু’ সব দলেই থাকবে। আমি বলতে পারি, ‘অমুক থাকলে ভালো হতো, তমুক থাকলে ভালো হতো।’ আমি নিশ্চিত অন্য অধিনায়কেরাও তেমনি বলবে। আমার কাছে মনে হয়, যে দল মাঠে ভালো খেলবে তাদেরই জেতার সুযোগ বেশি।
“অনেক দিন পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে আসছি। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক একটা আসর হবে। স্রেফ ক্রিকেটে ফিরে আসছি, এই চিন্তা না করে আমার কাছে মনে হয় ব্যক্তিগতভাবে অনেক কিছু পেতে পারি। কেউ যদি ভালো ব্যাটিং করে, ভালো বোলিং পারফরম্যান্স করে, তার জন্য জাতীয় দলের দরজা খুলে যেতে পারে। এটা সুযোগ সবার জন্য, এই টুর্নামেন্টে পারফর্ম করে নিজের জায়গাটা তৈরি করে নেওয়ার। আমার কাছে মনে হয় না যে কেউ এটাকে প্র্যাকটিস ম্যাচ বা সাধারণ টুর্নামেন্ট হিসেবে নেবে। আমরা যতটুক জাতীয় দলে সিরিয়াস থাকি, বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচ খেলার সময়, ওই লেভেলের প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা থাকবে।”
“যেহেতু এটা একটা টুর্নামেন্ট, আমরা একটা দল, চ্যাম্পিয়ন হওয়ারই আমাদের চিন্তা। চ্যাম্পিয়ন হওয়াই আমাদের ইচ্ছা। দিন শেষে যে ভালো খেলবে সেই পাবে।”
নাজমুল হোসেন শান্ত : “অবশ্যই ভালো লাগছে (টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে)। কখনোই তো এরকম হয়নি যে এতদিন মাঠের বাইরে ছিলাম। এরকম একটা সিরিজ শুরু হচ্ছে, অবশ্যই অনেক রোমাঞ্চিত। আশা করছি, খুব ভালো একটা সিরিজ হবে।”
“প্রত্যেকটি দলই ভালো। প্রত্যাশা অনেক উঁচুতে, আমাদের যে দলটা হয়েছে, অবশ্যই আমাদের পরিকল্পনা থাকবে চ্যাম্পিয়নশিপের জন্যই খেলব। আশা করছি, যদি সজহাত খেলা আমরা খেলতে পারি, ভালো কিছুই হবে।”
“তিনটা দলই খুব ভালো হয়েছে, তবে আমাদের ইতিবাচক দিক যেটা মনে করি, ফিল্ডিং খুবই ভালো আমাদের। সঙ্গে বোলিং-ব্যাটিং তো আছেই। আরেকটা ইতিবাচক দিক যেটা, সবচেয়ে বেশি তরুণ খেলোয়াড় আমাদের। আশা করি, তিন বিভাগেই ভালো কিছু হবে।”
মাহমুদউল্লাহ : “ভালো লাগছে। কারণ মাঠের মানুষ আমরা মাঠে ফিরছি। এতদিন প্র্যাকটিস করছিলাম। ওটার একটা আনন্দদায়ক ফ্যাক্টর ছিল। এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক খেলা চালু হচ্ছে, তো খুবই ভালো লাগছে। দিন শেষে এটাই আমাদের কাজ। ভালোবাসার জায়গা।”
“প্রত্যাশা অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। যারা প্রতিশ্রুতিশীল ও অভিজ্ঞতার দিক থেকে সেরা, তারা সবাই খেলছে। এটা আমাদের নিজেদের ভেতরে ভালো একটা প্রতিযোগিতা। প্রমাণ করার মঞ্চও। অনেক দিন পর যেহেতু আমরা মাঠে নামছি। সবার ভেতর একটা কৌতুহল, উদ্দীপনা কাজ করবে।”
“আমাদের দল খুব ভালো হয়েছে। টপঅর্ডার থেকে লেট মিডলঅর্ডার, স্পিনিং সাইড ভালো। পেস বোলিং ইউনিটও খুব ভালো। সব মিলিয়ে খুবই ব্যালান্সড দল। আমার মনে হয়, এটা খুবই ভালো একটা উদ্যোগ। এজন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ।”
তিন দল:
তামিম একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন, শাহাদাত হোসেন দিপু, ইয়াসির আলি, আকবর আলি, এনামুল হক, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মেহেদি হাসান, তাইজুল ইসলাম, মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি।
মাহমুদউল্লাহ একাদশ: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নাঈম শেখ, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, মাহমুদুল হাসান, নুরুল হাসান সোহান, সাব্বির রহমান, ইমরুল কায়েস, হাসান মাহমুদ, ইবাদত হোসেন চৌধুরি, রুবেল হোসেন, আবু হায়দার, মেহেদী হাসান মিরাজ, রকিবুল হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। (আগে ঘোষিত দলে মূল স্কোয়াডে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির নাম থাকলেও পরে তার চোটের কারণে স্ট্যান্ড বাই থেকে নেওয়া হয়েছে আবু হায়দারকে)।
শান্ত একাদশ:
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, আফিফ হোসেন, মুশফিকুর রহিম, তৌহিদ হৃদয়, ইরফান শুক্কুর, পারভেজ হোসেন ইমন, তাসকিন আহমেদ, আল আমিন হোসেন, আবু জায়েদ চৌধুরি, মুকিদুল ইসলাম, নাঈম হাসান, নাসুম আহমেদ, রিশাদ হোসেন।
টুর্নামেন্টের সূচি:
১১ অক্টোবর: মাহমুদউল্লাহ একাদশ-শান্ত একাদশ
১৩ অক্টোবর: মাহমুদউল্লাহ একাদশ-তামিম একাদশ
১৫ অক্টোবর: তামিম একাদশ-শান্ত একাদশ
১৭ অক্টোবর: মাহমুদউল্লাহ একাদশ-শান্ত একাদশ
১৯ অক্টোবর: মাহমুদউল্লাহ একাদশ-তামিম একাদশ
২১ অক্টোবর: তামিম একাদশ-শান্ত একাদশ
২৩ অক্টোবর: ফাইনাল
খুলনা গেজেট/এএমআর