বাবার কাছে সম্পত্তির ভাগ চাওয়ায় মেহেনাজ আক্তার (৩০) নামের স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারীকে নির্যাতন করে পা ভেঙ্গে দিয়েছেন তার স্বজনরা।
সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেলে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের নলবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ও শরণখোলা থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করছে।স্বামী পরিত্যাক্তা মেহেনাজ আক্তার নলবুনিয়া গ্রামের বাবা মাওঃ সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে। তার দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে দুই বছর ধরে বাবার বাড়ীতে বসবাস করছেন। বাড়ীর পাশে একটি টেইলার্সের দোকান দিয়ে সে জীবিকা নির্বাহ করে। আপন বোন ও সৎ ভাই-বোনদের মারপিটের শিকার মেহেনাজ আক্তরের দুটি পা ভেঙ্গে গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেহেনাজ আক্তার বলেন, আমার বাবা মাওঃ সিদ্দিকুর রহমান আমার মাকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করে। সেই থেকে তিনি আমাদের দুই বোনের কোন খোজ খবর রাখেন না। আমি অনেক কষ্ট করে মানুষের বাড়ীতে ও ঢাকাকে গার্মেন্টস এর চাকরী করে বড় হয়েছি। প্রায় তিন বছর আগে আমার স্বামী আমাকে তালাক দিলে আমি অসহায় হয়ে বাড়ীতে চলে আসি। এরপর ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাঁচতে আমি বাবার কাছে আমার সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে বললে, আমার আপন বোন ও সৎ ভাই-বোনরা মিলে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বেধড়ক মারপিট করে আমার দুটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি এখন আমার সন্তানদের নিয়ে কি ভাবে বাঁচবো।
মেহেনাজের সৎ মা কহিনুর বেগম বলেন, মেহেনাজ বাড়ীতে আসার পর থেকে সম্পত্তির ভাগ চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তার জমি লিখে দেয়া হয়েছে। যে জমিতে সে তার ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসবাস করছে। কিন্তু জমি লিখে দেওয়ার পর থেকে মেহেনাজ আরও সম্পত্তি ও টাকা দাবী করে। এরপর থেকে মেহেনাজের ছোট চাচা মাসুম বিল্লাহ’র ইন্ধনে মেহেনাজ তার ইচ্ছামত জমি দখলের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি নিয়ে তার বাবা বাধা দিলে, সে তার বাবাকে দা দিয়ে কোপাতে আসে। তখন অন্যান্য ছেলে-মেয়েরা মিলে তাকে মারধর করে। এরপর কিন্তু আমারাই মেহেনাজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। সেই থেকে হাসপাতালে আমি মেহেনাজের পাশে আছি। সেবা করে যাচ্ছি। এক প্রকার অতিষ্ট হয়ে ভাই বোনরা তাকে মেরেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেহেনাজের পাশে থাকা তার সৎ ভাই ইমরান জোমাদ্দার বলেন, মূলত বাবাকে দা দিয়ে কোপাতে যায় মেহেনাজ আপা। সে সময় আমিসহ অন্যান্য ভাই-বোনরা তাকে ঠেকাতে যাই। কিন্তু মেহেনাজ আপা এতটাই উত্তেজিত ছিলো যে,সে আমাদেরও মারতে শুরু করে। তখন অন্যান্য ভাই-বোনরা তাকে মারপিট করে। কিন্তু এতে তার পা ভেঙ্গে গেলো আমরাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইকরাম হোসেন বলেন, ঘটনার পর খবর পেয়ে পুলিশ প্রেরণ করা হয়েছিলো। এ বিষয়ে এখনও লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/কেডি