খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

এখনো গা শিউরে ওঠে আকলিমার

নিতিশ সানা, কয়রা 

`নদীতে মাছ ধুরি যে কয় টাকা  হয় তাতে কোন রম দিন চলি যায়। রাতি জুয়ারে আর সকালের জুয়ারে মিলে কোন কোন দিন একশ টাকা কোন দিন দুশো টাকা হয়। তাতেই কোন রকমে চলে যায়।’

এভাবে বলছিলেন উত্তর বেদকাশি  ইউনিয়নের রতনা ঘেরি গ্রামের শাকবেড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধে খুপড়ি ঘরের বাসিন্দা আকলিমা খাতুন (৪৩)। বিয়ের বছর দশেক না যেতেই দুই সন্তানসহ তাকে ছেড়ে দিয়েছে স্বামী। তাই মাথা গোঁজার  ঠাঁই হয় বাবার বাড়িতে।  সেই থেকে নদীতে জোয়ারের সময় জাল টেনে পোনা ধরে চলে তার জীবন সংগ্রাম। কথায় কথায়  ১৪ বছর আগের ঘূর্ণিঝড় আইলার দুঃসহ স্মৃতিচারণা করেন তিনি।

সেই দিনের কথা স্মরণ করে তিনি বলে ওঠেন, ‘ সেই কথা মনে হলে গা একনো শিউরে ওঠে।’  প্রতিদিনের মতো সেদিনও তিনি নদীতে মাছ ধরতে যান। দুপুরে দিক টিপ টিপ করে বৃষ্টি শুরু হয়। দেখতে দেখতে  নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বাড়ে। সেই পানি বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। আকলিমা তাড়াহুড়ো করে ফিরে আসেন বাড়িতে। এর কিছুক্ষণ পরে শাকবেড়িয়া নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে রত্নাঘেরি বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। তাঁর চোখের সামনে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঘর বাড়ি,  এক নিমিষেই সব কিছু ধ্বংস করে যায় বস কিছু। কোন রকমে দুই সন্তান নিয়ে বেড়িবাঁধের উপর আশ্রয় নিয়ে নিজেদের জীবন বাচিয়ে রাখেন।  রাতে কোন রকমে দুরের একটা সাইক্লোন সেন্টার আশ্রয় কেন্দ্র যেয়ে শুকনো খাবার খেয়ে কয়েক দিন কাটিয়ে দেন।।  সেখান থেকে  উচু বেড়িবাঁধের উপর একটা ছোট্ট খুপড়ি বেধে বসবাস শুরু করেন।

আকলিমা জানান, এক সময়ে  জীবিকার তাগিদে চলে যান জেলা শহর খুলনায়।সেখানে যেয়ে দিন মুজরির কাজ করে দুই সন্তানকে নিয়ে কোন রকমে চলে যায় জীবন। কোভিট-১৯ করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় ফের কর্মহীন হয়ে ফিরে আসেন নিজের ঠিকানায়৷ ঘুর্ণিঝড় আইলায় ঘর বাধার জায়গা টুকু নদীতে বিলীন হওয়ায়,  বেড়িবাঁধের উপর একটা ছোট্ট খুপড়িতে ঘরে ঠাঁই নেন। আবারও জীবন সংগ্রামে শুরু হয় নদীতে মাছ শিকার।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!