দীর্ঘ দেড়যুগ পর যশোর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১২ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় শহরের ঈদগাহ ময়দানে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম। দেড় যুগ পর এ সম্মেলন ঘিরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবমূখর পরিবেশের সুষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুপুর থেকেই সম্মেলনস্থলে আসতে শুরু করেন দলের নেতা–কর্মীরা। পুরো সম্মেলনস্থল ত্রিপল দিয়ে ঢাকা থাকায় সম্মেলনে কোন বাধ সাধতে পারেনি বৃষ্টি।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী। প্রধান বক্তা ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু। বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদসহ ৬টি আসনের সংসদ সদস্যরা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাবার লোভে অন্ধ হয়ে গেছে। তারা সংবিধান ভেঙে তত্ত্ববধায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখছে। যে স্বপ্ন তাদের কোনদিন পূরণ হবে না। সংবিধানের বাইরে আওয়ামী লীগ কোনদিন যাবে না। সংবিধান অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, যশোরের মানুষের নৌকায় আস্থা রয়েছে। গত নির্বাচনে তারা ৬টি আসনই আওয়ামী লীগকে উপহার দিয়েছে। এবারও ঐতিহ্যবাহী এ জেলার মানুষ নৌকায় ভোট দেবে ও দেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানাবে।
এদিকে, দেড় যুগ পর এ সম্মেলন ঘিরে শহর জুড়ে সাজ সাজ রব। ফেস্টুন, বিলবোর্ড, ব্যানারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানসহ আশপাশের এলাকা। সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। সম্মেলনের মাধ্যমে আসবে নতুন নেতৃত্ব। এবার তরুণরাই নেতৃত্বে আসবেন, এমনটি বলছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
সম্মেলনে সভাপতি ও সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। পদপ্রত্যাশী নেতাদের সমর্থনে ব্যানার-ফেস্টুন, বিলবোর্ডে সম্মেলনস্থল, শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বিভিন্ন মোড় ছেয়ে গেছে। সম্মেলনে সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মোস্তফা কামাল এবং নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির তুহিন। সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও লেবুতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলন, আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমামুল কবীর, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এসএম নিয়াতম উল্লাহ ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস এবং গাজী টিপু।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৬ সালে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে আসাদুজ্জামান মিঠুকে সভাপতি ও নূরে আলম সিদ্দিকী মিলনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এরআগেও চার বছর আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন আসাদুজ্জামান মিঠু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন অধ্যক্ষ নূরে আলম সিদ্দিকী মিলন। দীর্ঘদিন মেয়াদোত্তীর্ণের পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর নির্দেশে গত বছরের ২৮ জুন এ কমিটি ভেঙে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করা হয়। এ কমিটিতে আসাদুজ্জামান মিঠুকে আহবায়ক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ নুরে আলম সিদ্দিকী মিলন ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ইমামুল কবীরকে যুগ্ম আহবায়ক করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। এ সম্মেলন বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি