দক্ষিণ আফ্রিকার যুবাদের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে ৪ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এই জয়ের মধ্য দিয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-১ এ এগিয়ে গেল সফরকারীরা।
আজ (মঙ্গলবার) খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ডিএল মেথডে ৪৮ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪১ রান করে বাংলাদেশ। যেখানে রিজওয়ান ও রাব্বির জোড়া অর্ধশতকের দেখা পায় স্বাগতিকরা। সর্বোচ্চ ৭৭ রান এসেছে শিহাব জেমসের ব্যাট থেকে। আর রাব্বির ব্যাট থেকে আসে ৭৪ রান। জবাবে ৪৭.১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় প্রোটিয়া যুবারা।
এদিন বৃষ্টির বাগড়ায় ডিএল মেথডে ৪৮ ওভারে ২৪১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দারুণ শুরু করে সফরকারীরা। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার হেলহুয়ান দ্রে গিলবার্ট প্রিটোরিয়াস ও থেবে গ্যাজিট দু’জনই অর্ধশতক করে। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ১২৫ রান। ২০.৫ ওভারে শিহাব জেমসের বলে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন থেবে গ্যাজিট। তিনি ৫৮ বলে ৫৩ রান করেছেন। এরপর প্রিটোরিয়াসকে সঙ্গ দেয় ডেভিড টিগার। তবে ২৩.২ ওভারে দলীয় ১৩১ রানে আরিফুল ইসলামের বলে বোল্ড আউটের শিকার হন আরেক ওপেনার প্রিটোরিয়াস। ৭৯ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৬ রান। এরপর অধিনায়ক জুয়ান জেমস ও ডেভিড টিগারের ব্যাটে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। জেমস ৩৪ ও ডেভিড ৩০ রান করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত লড়েছে বাংলাদেশের যুবারা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩ রানের। ৪৭.১ ওভারে রাব্বির প্রথম বলে ওলিভার হোয়াইটহেড হাকানো বাউন্ডারীতে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় প্রোটিয়া যুবারা।
এরআগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা রাঙাতে পারেনি বাংলাদেশের দুই ওপেনার আদিল বিন সিদ্দিক ও চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৩.১ ওভারে দলীয় ১৯ রানে ত্রিস্টান লাসের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন আদিল। ১৩ বলে ৮ রান করেন তিনি। রিজওয়ানকে সঙ্গ দিতে আসেন নাইম আহমেদ। তিনিও ব্যর্থ হন। ১০ বলে ৬ রান করেছেন তিনি। রিজওয়ানকে সঠিক সঙ্গ দিতে পারেনি আরিফুল ইসলাম এবং আহরার আমিনও। আরিফুল ৬ ও আহরার ১ রান করে ফিরেছেন। ১৪.৩ ওভারে ৭০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইয়াং টাইগাররা। তবে লড়াই করছিলেন রিজওয়ান একাই। তাকে সঙ্গ দেন শিহাব জেমস। ৩৭ বলে ২৯ রান করে ত্রিস্টান লাসের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। জাকারিয়া ইসলাম শান্ত নেমে ভালো করতে পারেননি। তবে রিজওয়ানের অর্ধশতকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। রিজওয়ানের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বি। ৩৬.২ ওভারে দলীয় ১৫৮ রানে সিফো পটসেন বলে সামনে এগিয়ে হাঁকাতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন রিজওয়ান। তিনি চারটি ওভারবাউন্ডারী ও ২ টি বাউন্ডারীর সাহায্যে ৯৮ বলে সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন। এবার দলের হাল ধরেন মাহফুজুর রাব্বি ও রাফিউজ্জামান রাফি। ৪০ ওভারে স্বাগতিকদের ১৬৮ রানে শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে প্রায় এক ঘন্টা খেলা বন্ধ ছিল। বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হলে ডিএল মেথডে ২ ওভার কমানো হয়। খেলা গড়ায় ৪৮ ওভারে। বৃষ্টির পর ২১ রানে রাব্বি এবং রাফি ৭ রানে ব্যাটিং শুরু করে। গড়ে তোলেন দারুণ এক জুটি। শেষ মুহুর্তে এই জুটি বাংলাদেশের রানের পুঁজি এনে দেয়। রিজওয়ানের পর অর্ধশতকের দেখা মেলে রাব্বির। ম্যাচের শেষ ওভারের শেষ বলে ক্যাচ আউট হন রাব্বি। ৬৬ বলে ৭৪ রান করেছেন তিনি। রাব্বির ঝড়ো ইনিংসে ৪টি ওভারবাউন্ডারী ও ৩ টি বাউন্ডারীর দেখা মেলে। ৪৮ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশের যুবারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার ত্রিস্টান লাস একাই চারটি উইকেট সংগ্রহ করেন। এছাড়া সিফো পটসেন ২টি এবং জুয়ান জেমস, ওলিভার হোয়াইটহেড ও রোমাশান পিল্লে একটি করে উইকেট সংগ্রহ করেছেন।
খুলনা গেজেট/এমএম