খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

ফ্রান্সে বিক্ষোভ : এক দিনে গ্রেপ্তার ৮৭৫, আহত ২৫০ পুলিশ সদস্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পুলিশের গুলিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণের মৃত্যুতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স। বৃহস্পতিবার রাজধানী রাত থেকে এ পর্যন্ত রাজধানী প্যারিসসহ অন্যান্য শহর থেকে পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতার অভিযোগে ৮৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এছাড়া সংঘাত ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া ইট-পাটকেলে গতকাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ২৫০ জন সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুক্রবার মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরাল্ড ডারমানিন জানিয়েছেন, বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে ফরাসি পুলিশের এলিট ফোর্স রেইড অ্যান্ড জিআইজিএন ইউনিটের সদস্যদেরসহ মোট ৪০ হাজার পুলিশ সদস্যকে ফ্রান্সজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে; কিন্তু তারপরও সংঘাত ও নাশকতা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশেল উপস্থিতিতেই দোকানে, ভবনে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করছেন বিক্ষোভকারীরা, গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন জ্বালিয়ে দিচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভকারীরা ফ্রান্সের ‍পূর্বাঞ্চলীয় শহর লিওনে এটি ট্রামে অগ্নিসংযোগের পর দেশটির অভ্যন্তরীণ সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাস ও ট্রাম চলাচল বন্ধ থাকবে ফ্রান্সে।

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত মঙ্গলবার। ওইদিন সকালে প্যারিসের উপশহর নানতেরে ট্রাফিক বিধি অমান্য করে জোরে গাড়ি চালানোর অভিযোগে নাহেল এম. নামের ১৭ বছর বয়সী এক তরুণ গাড়ি থামানোর নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু নাহেল তাতে কর্ণপাত না করে গাড়ি নিয়ে সরে পড়ার চেষ্টা করলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন পুলিশ সদস্যরা। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাহেলের।

নাহেলের পরিবারের সদস্যরা আলজেরিয়া থেকে এসে ফ্রান্সে স্থায়ী হয়েছেন। তাদের আর্থিক অবস্থাও খুব ভালো নয়। প্যারিসের নানতের উপশহরটি মূলত দরিদ্র অধ্যুষিত এলাকা। সেখানেই মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। নাহেল ও তার মা মৌনিয়া ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

পুলিশের গুলিতে নাহেল নিহত হওয়ার পরই বিক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে নানতেরে। তারপর বৃহস্পতিবার বিকেলে এক অনলাইন বার্তায় নাহেলের মা মৌনিয়া তার নিহত ছেলের জন্য ন্যায়বিচারের দাবি জানান। সেই সঙ্গে পাশে থাকার জন্য বিক্ষোভকারীদের ধন্যবাদও জানান তিনি।

তার এই অনলাইন বার্তা পোস্ট হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে আন্দোলন তীব্র রূপ নিতে থাকে। প্যারিসসহ ফ্রান্সের শহর শহরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিক্ষোভ।

মূল বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল প্যারিসে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ না নিয়ে সামনের দিনগুলোতে ফ্রান্সের শহরাঞ্চলে বিক্ষোভকারীদের ধ্বংসযজ্ঞ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

নাহেলকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো সেই পুলিশ সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। নাহেলের মা মৌনিয়া বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমার অভিযোগ কেবলমাত্র আমার ছেলেকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া পুলিশসদস্যদের প্রতি। ফ্রান্সের পুলিশের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই।’

কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। শুক্রবার ব্রাসেলসে জরুরি সফর বাতিল করে মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। বৈঠক শেষে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যদি আরও খারাপের দিকে যায়, সেক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বৈঠকে।’

সূত্র : বিবিসি, এএফপি

খুলনা গেজেট/এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!