পরকীয়ার জেরেই আপন জ্যাঠতুতো ভাই আনন্দের হাতেই নির্মমভাবে খুন হয় উপজেলার দেলুটির মসলা ব্যবসায়ী অনুপ মন্ডল (২৮)। ঘটনার মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনের পাশাপাশি পুলিশ হত্যাকারী একই এলাকার নির্মল মন্ডলের ছেলে আনন্দ মন্ডল (৪০) কে গ্রেপ্তার করে। এ সময়ে পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়ি গেটের খাল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে সোমবার সকালে উপজেলার দেলুটির ফুলবাড়ি থেকে স্থানীয় অনুকুল মন্ডলের ছেলে মসলা ব্যবসায়ী অনুকুল মন্ডলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ঐ দিন রাতেই নিহতের পিতা অনুকুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানা পুলিশ জানায়, ঘটনায় নিহতের পরিবারের পাশাপাশি প্রতিবেশীদের তাৎক্ষণিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে। এবং বেশ কিছু তথ্য’র উপর ভিত্তি করে তদন্তকার্যক্রম শুরু করে এবং সফলও হয়। বিশেষ করে মাস তিনেক আগে নিহত অনুপের এক বড় ভাই আনন্দর স্ত্রী জয়ার আত্মহত্যার বিষয়টি নাড়া দেয় পুলিশকে। যার উপর জোর দিয়ে ঘটনার দিনই থানা ওসি সাংবাদিকদের জানান, খুব শীঘ্রই হত্যার মোটিভ উদ্ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, নিহত অনুপের সাথে তার জ্যাঠতুতো ভাই আনন্দ’র স্ত্রী জয়ার সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। যা সহ্য করতে না পেরে প্রায় তিন মাস আগে জয়া আত্নহত্যা করে। এ ঘটনায় শোকের পাশাপাশি প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠে আনন্দ। ঐ ঘটনায় অনুপকে দায়ী করে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।
এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রবিবার (২৫ জুন) রাত আনুমানিক ৮/৯ টার দিকে সে অনুপকে বাড়ির পাশে বিলের নির্জন ভিটায় ডেকে নেয়। এরপর কৌশলে প্রথমে গেঞ্জি দিয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ফলকাটা ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। পরে ব্যবহৃত ছুরিটি পাশের ফুলবাড়ি গেটের খালে ফেলে দেয়।
হত্যার মোটিভ উদ্ঘাটনে মরিয়া থানা পুলিশ তদন্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেল ৫টার দিকে নিজ এলাকা থেকে প্রথমত সন্দেহজনকভাবে আনন্দকে আটক করে। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। এরপর বুধবার সকালে আনন্দের দেখানো মতে পুলিশ ফুলবাড়ী গেটের খাল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের পিতা অনুকূল মন্ডল বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে, যার নং ৩৩।
খুলনা গেজেট/ এসজেড