যশোরে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি নিয়ে তোঘলকি কারবার চলছে। ডিলাররা গ্রাহকের কাছে ইচ্ছামত মালামাল বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার শহরের শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিসিবি’র পণ্য না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরে যান কার্ডধারী নারী-পুরুষ।
এসময় পণ্য বঞ্চিতরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের ঘোষণানুযায়ী বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিসিবির পণ্য বিক্রির কেন্দ্র খোলা থাকবে। কিন্তু দুপুর ২টায় এসে দেখি ঘন্টাখানেক আগেই ডিলারের লোকজন পিকআপে পণ্য নিয়ে চলে গেছে। তারা হাতেগোনা কয়েকজনের কাছে মালামাল বিক্রি করে বাকি পণ্য নিয়ে চলে গেছে। এ খবরের ভিত্তিতে দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে কেন্দ্রটিতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। মোবাইলে কেন্দ্রটির ডিলার আসাদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই, কেন মালামাল বিক্রি না করে কর্মীরা চলে গেছে বিষয়টি জেনে জানাচ্ছি।
সোমবার (২৬ জুন) যশোর পৌর এলাকায় টিসিবির ডিলার পয়েন্টগুলোতে সরকারের সাশ্রয় মূল্যের সয়াবিন তেল ও মসুরির ডাল বিক্রি করা হয়েছে। এর আগের দিন রোববার শহরে মাইকিং করে বিক্রির কথা জানানো হয়। সোমবার টিসিবির ডিলার পয়েন্টগুলোতে সরকারের সাশ্রয় মূল্যের ডাল ও তেল ফ্যামিলি কার্ডধারীরা কিনতে যান। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সোমবার ভুর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু ঈদের আগেই যশোরে শহরে টিসিবির পণ্য নিয়ে নয়-ছয় ঘটনা ঘটলো। দুপুর ২টার দিকে যশোর ইনস্টিটিউটে টিসিবির ডিলার পয়েন্টে দেখা যায় উপকারভোগী নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। উপকারভোগীরা জানান, এবার টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডে উপকারভোগীরা কিনতে পেরেছেন ২ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ও ২ কেজি মসুরির ডাল।
দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে কেন্দ্রে টিসিবির পণ্য কিনতে যান সাংবাদিক সুনীল ঘোষ। তিনি বলেন, বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিসিবির পণ্য বিক্রির নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এখানে ১টা ৩৫ মিনিটে পৌঁছে দেখি ডিলার ও তার লোকজন চলে গেছে। দরজার সামনে কিছু মসুরির ডাল ও কিছু পলিথিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তিনিও ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত ঘটনার তদন্ত দাবি করেন। তার ফ্যামিলি কার্ড নম্বর-৭১৩০৮।
এ বিষয়ে টিসিবির ডিলার এসোসিয়েশনের নেতা মাফুজুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এরকম তো হওয়ার কথা না। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডিলার পয়েন্ট খুলে রাখার নিয়ম। তিনি সংশ্লিষ্ট ডিলারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
যশোরে টিসিবির পণ্য নিয়ে নয়-ছয় হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এরআগে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে যশোর শহরের বড়বাজার আলুপট্টির রেজাউল স্টোরে অভিযান চালিয়ে ১০৮ বোতলজাত সয়াবিন তেল উদ্ধার করেছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। যশোর জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট কে এম আবু নওশাদের নেতৃত্বে ওই অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। টিসিবির ডিলার গৌরঙ্গ পাল বাবু ওই তেল বিক্রি করেছিলেন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।
খুলনা গেজেট/কেডি