বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। কোরবানির সময় কিছুটা বাকি থাকলেও, ক্রেতা-বিক্রেতারা ঘুরছেন বিভিন্ন হাটে। সাইজ ও দামে পছন্দ হলে, ক্রয় করে ফিরছেন বাড়িতে। কাঙ্খিত দামের অপেক্ষা করছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা।
প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের তথ্য অনুযায়ী জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২২টি পশুর হাট বসেছে। স্থানীয় ব্যবস্থাপনায়ও কিছু হাট বসেছে বিভিন্ন এলাকায়। এর মধ্যে সব থেকে বড় পশুর হাট ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা গরুর হাট। শুক্রবার (২৩) সকাল থেকেই হাজার হাজার পশু ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাক-ডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে হাটটি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে পশু ও ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা।
খুলনার বটিয়াঘাটা থেকে ১৮টি গরু নিয়ে বেতাগা হাটে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল ৮টায় হাটে এসেছি। লোকজন অনেক থাকলেও, তেমন বিক্রি নেই। দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৩টা গরু বিক্রি করেছি। লাভও যে অনেক হয়েছে তা নয়।
মোল্লাহাটের গাফরা এলাকা থেকে গরু নিয়ে আসা খামারি আমজেদ শেখ বলেন, চারটি গরু নিয়ে আসছিলাম। ১টি বিক্রি করেছি। আজকে মনে হয় আর হবে। অনেক লোকজন থাকলেও, দাম ভাল বলে না। তাই দাম বলতে পারছি না।
ফকিরহাটের মাশকাটা এলাকা থেকে গরু কিনতে আসা মাওলানা আজিজুল ইসলাম বলেন, গরুর দাম এবার অনেক বেশি। দেখতেছি, কিন্তু দামে হচ্ছে না। দামে হলেই কিনব।
বাগেরহাট শহরের দাসপাড়া এলাকা থেকে গরু কিনতে আসা শাহ আলম শেখ বলেন, চারজন মিলে এসেছি গরু কিনতে । কিন্তু এখনও কিনতে পারিনি। আমরা যে দাম বলি, তার থেকে দের গুন দাম চেয়ে বসে থাকে ব্যাপারিরা। সময়তো আছে এখনও তাই একটু দেখে নিচ্ছি।
তবে কেউ কেউ গরু ক্রয়ও করছেন। গরু ক্রয় করে বাড়ি ফেরা আক্কাস আলী মল্লিক বলেন, দীর্ঘক্ষন ঘুরে একটি ষাড় কিনেছি। প্রায় ৫ মন ওজনের গরুটি আমরা এক লক্ষ ৬ হাজার টাকায় কিনেছি। গরুটার রংও ভাল, সবার পছন্দ হয়েছে।
খাবার ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক পন্যের দাম বাড়ায় গরুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি করে হানিফ শেখ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, যে ভুষি কিনেছি ৩৫ টাকা সেই ভুষি এখন ৬০ টাকা। ভুট্টার গুড়ি, খৈল, পালিশ সবকিছুরই দাম-ই বেশি। যার কারণে গরুর দামও অনেক। এই দাম বেশি থাকায় গৃহস্থরা গরু ক্রয়ের ক্ষেত্রে অনেক হিসেবে নিকেশ করছেন।
হাট ইজারাদার আনন্দ দাস বলেন, আমাদের হাটে জাল টাকা শনাক্তের জন্য মেশিন রয়েছে। পুলিশ, গ্রাম পুলিশের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। যারা ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষনিক কাজ করছেন। এছাড়া আমরা খুবই কম খাজনায় গরু ক্রয়-বিক্রয়ের সুযোগ দিচ্ছি খামারী, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের।
শুধু হাট নয়, এবার কোরনবানিতে অনলাইনেও পশুর বিক্রির ব্যবস্থা করেছে প্রাণি সম্পদ বিভাগ। সেই সাথে খামারিরা নিজ বাড়িতে বসেও কোরবানির পশু বিক্রি করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেও অনেকে গরু-ছাগল বিক্রি করছেন।
বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, কোরবানি উপলক্ষে জেলায় ২২টি হাট বসানো হয়েছে। প্রতিটি হাটে আমাদের ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম রয়েছে। এছাড়া কোন অসাধু ব্যবসায়ী যাতে হরমন বা অন্য কোন খারাপ রাসয়নিক দিয়ে গরু বিক্রি করতে না পারে সেজন্য প্রাণি সম্পদ বিভাগের নজরদারি রয়েছে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এসজেড