অনেকেরই মুড সুইংয়ের সমস্যা আছে। আদৌ তাদের মন ভালো আছে নাকি মন খারাপ তাও বুঝে ওঠা যায় না। কিছুক্ষণ আগে হয়তো হাসিমুখে ছিলেন পরক্ষণেই তার চোখে মুখে রাগের ছাপ স্পষ্ট।
পুরুষ-নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই মুড সুইং দেখা যায় । তবে নারীদের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ অনেকটাই বেশি। নারীদের কেন মুড সুইং হয় এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গেলে সাধারণ কিছু জিনিস জানা অবশ্যই প্রয়োজন। মেয়েদের মুড সুইংয়ের জন্য দায়ী হল হরমোনাল চেঞ্জ । ঋতুচক্রের ফলে এই হরমোনাল চেঞ্জ হয়। তখন ক্ষণে ক্ষণে মেজাজ বদল দেখা যায় । এছাড়াও গর্ভাবস্থায় হবু মায়ের শরীরে হরমোন পরিবর্তনের ফলে মুড সুইং হয়ে থাকে।
মুড সুইংয়ের লক্ষণ কী কী ?
মুড সুইং হলে খিটখিটে ভাব, রাগ , মেজাজ, কান্না , অতিরিক্ত স্পর্শকাতরতা ,অতিরিক্ত চিন্তা, অস্থিরতা, হতাশা প্রভৃতি দেখা যায়।
মুড সুইং হচ্ছে বুঝবেন কীভাবে
১. একটা জিনিস যা কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত আপনার বেশ ভালো লাগছিল তবে হঠাৎ করেই ভীষণ বিরক্তিকর হয়ে উঠল।
২. ছোটখাটো বিষয়ে রাগ হওয়া, বিরক্ত ভাব আসা
৩. বন্ধুবান্ধব পরিবারের সদস্যদের এড়িয়ে চলা
৪. যেকোনো কাজে অনীহা, প্রয়োজনের বেশি কথা বলতে বিরক্তিবোধ
৫. শরীরে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে অল্প মুড সুইং সব মেয়েদেরই হয়। কিন্তু অতিরিক্ত মুড সুইং মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলতে পারে। এ কারণে এ বিষয়টিতে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, যিনি মুড সুইংয়ের শিকার তিনি নিজেই এই সম্পর্কে জানেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মুড সুইংয়ের কারণে সেই মুহূর্তে ভুল বোঝাবুঝিতে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে । এ কারণে মুড সুইং সম্পর্কে নিজে জানা, অন্যকে জানানো অত্যন্ত প্রয়োজন। খুব বেশি পরিমাণে মুড সুইং দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মুড সুইং কাটিয়ে উঠতে কী করবেন-
১. ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন হলে মন এবং মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে যোগব্যায়ামের অভ্যাস করুন।
২. সুষম খাবার খান।
৩. মুড সুইং আসলে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। এ কারণে মানসিক চাপ কমানোর জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি।
৪. নিজেকে গুটিয়ে না রেখে প্রকাশ করুন। যা মনে আসছে বা যা বলতে চাইছেন বলে ফেলুন । এতে সাময়িকভাবে কারও সাথে মনোমালিন্য হলেও বিষয়টি পরবর্তীতে আপনার বা আপনার কাছের মানুষদের ক্ষতি করবে না।
৫. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। রোজ নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করে ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন।
প্রাথমিকভাবে এসব পদ্ধতি আপনার মুড সুইং কাটিয়ে উঠতে বেশ খানিকটা সাহায্য করবে। তবে তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে কাজের চাপ, পারিবারিক চাপ, ব্যক্তিগত সমস্যা, ঘুমের অভাব, বাইপোলার ডিসঅর্ডার প্রভৃতির কারণে মুড সুইং দেখা দিতে পারে। ঘন ঘন এই সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
খুলনা গেজেট/এনএম