ফেসবুকে পরিচয়, প্রেম বিয়ে, দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণ, বাপের জমি-জমা বিক্রি স্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া আর এভাবেই প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন সৈয়দ সোহাগ মিয়া (৩৭)। সোহাগ ময়মনসিংহ জেলার সদর থানার বাগমারা গ্রামের সৈয়দ শফিকুলের ছেলে। এ ঘটনায় খুলনার খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতারণার শিকার সোহাগ মামলা করে উল্টো বিপাকে পড়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও অধিকাংশ আসামী এখনও পুলিশের জালে ধরা পড়েনি। ফলে বাদী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানাগেছে, খুলনার খানজাহান আলী থানার গিলাতলা কেডিএ আবাসিক এলাকার কামাল হোসেনের মেয়ে নুর জাহান সিদ্দিকা (৪০)’র সাথে ফেসবুকে পরিচয় ও বিয়ে হয় সৈয়দ সোহাগের। বিয়ের পর সড়ক দুর্ঘটনায় সোহাগের ডান পায়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাঁর জমি-জায়গা বিক্রি করে ২৪ লাখ টাকা স্ত্রী নুর জাহান সিদ্দিকার কাছে নিজের (সোহাগ) ব্যাংক একাউন্টে (ডাচ-বাংলা) রাখার জন্য দেন। কিন্তু স্ত্রী নুর জাহান ওই টাকা স্বামী সোহাগের এ্যাকাউন্টে না রেখে নিজের একাউন্টে জমা রাখেন। এরপর সোহাগ স্ত্রীকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা থেকে ঢাকায় যান। সেখান থেকে একদিন পালিয়ে যান নুর জাহান। এরপরেই সোহাগ জানতে পারেন, তাঁর টাকা স্ত্রী নিজের একাউন্টে রেখেছেন।
পরবর্তীতে ২৯ ডিসেম্বর সোহাগ স্ত্রীর গ্রামের বাড়ি খুলনা খানজাহান আলী থানার গিলাতলা কেডিএ আবাসিকে আসেন। এ সম স্ত্রী নুর জাহান সিদ্দিকা, তার পিতা কামাল হোসেন (৬৫), সোহাগকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। উল্টো স্ত্রী সোহাগকে কাবিননামার টাকাসহ তালাক প্রদান করতে চাপ সৃষ্টি করেন। এসময় ভুক্তভোগী সোহাগ মিয়া তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। ভুক্তভোগী সোহাগ টাকা চেয়ে আকুতি না জানালে কাজ হয়নি। চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সোহাগের স্ত্রী ও শ^শুর বাড়ির লোকজন সোহাগকে হত্যার চেষ্টা চালান। তাদেও বেধড়ক মারপিটে পুনরায় সোহাগের পা ভেঙ্গে যায়। স্ত্রী, শ^শুর কামাল ও নুরজাহান সিদ্দিকার ভগ্নিপতি আসাদ ভুক্তভোগীর গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্ঠা করেন। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। গত ৬ মে চিকিৎসা শেষে সোহাগ মিয়া খানজাহান আলী থানায় স্ত্রী নুর জাহান সিদ্দিকা, তার পিতা কামাল ও স্ত্রীর ভগ্নিপতি আসাদকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ( যার নং ৪, তাং০৬/০৫/২৩) ।
খানজাহান আলী থানার ওসি মো. কামাল হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ওই মামলার তিনজন আসামির মধ্যে আসাদ নামে একজনকে ৭ মে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
খুলনা গেজেট/কেডি