খুলনায় ১৯ বছর পর পিপলস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির মেধাবী ছাত্র আবু সালেহ অপু হত্যা মামলায় ২ আসামিকে ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে এ মামলার অপর ৪ আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিল।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হল, উজ্জল ও শহীদুল। খালাসপ্রাপ্তরা হল, রাজীব, কামরুল, বাবু ও রাসেল।
সোমবার খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আ: ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো: রুবেল খান। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ওই আদালতের পিপি এড ফরিদ আহমেদ।
রায় ঘোষণার পর আদালতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নিহত অপুর বাবা সুলতান আহমেদ মজনু। তিনি খুলনা গেজেটকে বলেন, এ রায়ে তিনি সংক্ষুব্ধ। রায়ের বিপক্ষে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন। সেখানে তিনি ন্যায় বিচার পাবেন। ঘটনার বিবরণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, শত্রুতামূলকভাবে তার সন্তানকে হত্যা করেছে এ মামলার আসামিরা।
তিনি আরও বলেন, অপু পিপলস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিল। সব পরীক্ষায় সে প্রথম হত। আর এ কারণে আসামিরা তাকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে অপু ঘরে ভাত খাচ্ছিল। এ সময়ে মামলার আসামি উজ্জল অপুকে ডাকতে থাকে আর অন্যান্য আসামিরা বাইরে দাড়িয়ে ছিল। অপুর বাবা মজনু ডেকে দিলে আসামিদের সাথে সে বাইরে চলে যায়। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উজ্জলকে অপুর বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তর দেয় আপনাদের বাসায় ১ সপ্তাহের বেশি আসি না। এমন উত্তরে অপুর বাবা চিন্তিত হয়ে পড়েন। সম্ভাব্য সবস্থানে তার খোঁজ নিয়ে ব্যর্থ হন তিনি। পরবর্তীতে তিনি উল্লিখিত সকল আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন তিনি। পরেরদিন আসামিদের স্বীকারোক্তিতে মুজগুন্নি কৃষি ব্যাংকের সীমানা প্রাচীরের পাশের ধানক্ষেত থেকে অপুর ক্ষত বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি বলেন, আমার ছেলেকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সিগারেটের আগুনের ছেকা দেওয়া ছিল। চোখের মধ্যে আঙ্গুল দিয়ে চোখ নষ্ট করেছিল তারা। আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলাম কিন্তু আজ এ রায় শুনে আমি মর্মাহত।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ১৯ বছর পর এ মামলাটি হঠাৎ করে সোমবার শিশু আইন হিসেবে গণ্য করে রায় দেওয়াকে গ্রহণ করতে পারছিনা। আমরা সংক্ষুব্ধ হয়েছি। এ মামলা উচ্চ আদালতে গেলে বাদী সঠিক বিচার পাবে। তিনি বলেন, মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষ থেকে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
খুলনা গেজেট/ এইচএইচ/ এমএম/ এসজেড