খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

২৮ বছরেও পূর্ণতা পায়নি দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স

ফুলতলা প্রতিনিধি

২৮ বছরেও পূর্ণতা পায়নি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি খুলনার ফুলতলা উপজেলার দক্ষিণডিহির রবীন্দ্র কমপ্লেক্স। প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে এ প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ। ভারতের শান্তিনিকেতনের আদলে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকলেও আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

জেলা প্রশাসককের কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে খুলনা জেলার তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাজী রিয়াজুল হক দক্ষিণডিহিতে রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেন। ১৯৯৫ সালে ৭ সেপ্টেম্বর ফুলতলা উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিতাভ সরকারসহ স্থানীয় চেয়ারম্যান, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের সহায়তায় বাড়িটি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে বাড়িটি সংরক্ষণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০০০ সালের ৮ আগষ্ট বাড়িটি দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রততত্ন অধিদপ্তরকে।

কাজী রিয়াজুল হকের নেতৃত্বে ফুলতলায় সুধীজন, বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে মতবিনিময় সভায় বাড়িটিকে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই থেকে কমপ্লেক্স ভবনের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের কাছে ৪৯ লাখ টাকা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয় এ বাবদ ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। ওই টাকা দিয়ে ২০১২ সালের মাঝামাঝি ভবন সংস্কার, একপাশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগসহ অন্যান্য কাজ করা হয়। এরই মধ্যে দোতলা ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তার স্ত্রী মৃণালিনী দেবী আবক্ষ মূতি পুরানো সবেদা তলায় নির্মিত হয়েছিল মৃণালিনী মঞ্চ।

কিন্তু বাড়িটি ঘিরে রবীন্দ্রনাথের কর্মময় জীবনের উপর সংগ্রহশালা কাম লাইব্রেরি, অডিটোরিয়ামসহ রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র, রেষ্ট হাউস নির্মাণ এখণও হয়নি। পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা, পিকনিক স্পট নির্মাণ, রবীন্দ্র কমপ্লেক্সে প্রবেশের ৩টি রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ বাকি আছে। এছাড়া এখানে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে প্রস্তাবিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখা ক্যাম্পাস বা স্বতন্ত্র ইনষ্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, বেজেরডাঙ্গা রেলষ্টেশনের নাম পরিবর্তন করে দক্ষিণডিহি রেলষ্টেশন এবং খুলনা-বেনাপোলগামী ট্রেনকে মৃণালিনী এক্সপ্রেস নামকরণও বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া ভারতের শান্তিনিকেতনের আদলে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকলেও ২৮ বছরেও হয়নি।

বর্তমানে দৃশ্যমান কাজের মধ্যে শুধুমাত্র সীমানা প্রাচীর, মূল ভবনের সংস্কার ও রঙের কাজ, নিচতলায় অপূর্ণাঙ্গ লাইব্রেরী, সংগ্রহশালা ও দর্শনার্থীদের অবসর যাপনের জন্য ছাউনী তৈরী, বিনোদনের জন্য পার্ক ও টয়লেট নির্মিত হয়েছে।
অবশ্য দক্ষিণডিহিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুড়বাড়ী ২০১৬ সালের ১০ মে ‘দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র স্মৃতি যাদুঘর’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ওই বছর ১ এপ্রিল’ ১৫ থেকে দেশী ও বিদেশী দর্শণার্থীদের জন্য টিকিটের প্রচলন করা হয়। দেশী দর্শণার্থীদের ২০টাকা এবং বিদেশীদের জন্য ৫০টাকা টিকিটের মূল্য চালু করা হয়েছে।

এদিকে কবিগুরুর ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানামালা। বিকাল সাড়ে ৪টায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানমালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি। খূলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুকুল কুমার মৈত্র এর সভাপতিত্বে অনুঠিতব্য অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শেখ আকরাম হোসেন। স্বাগত বক্তৃতা করবেন ইউএনও খোশনূর রুবাইয়াৎ । মূখ্য অলোচক থাকবেন খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার সাধন রঞ্জন ঘোষ।

দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় ইউএনও খোশনূর রবাইয়াৎয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম। মূখ্য আলোচক থাকবেন ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও গভেষক প্রফেসর ড. স্বরোচিষ সরকার।

বুধবার সমাপনী দিনে বিকাল সাড়ে ৪টায় খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধূরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা বিপিএম, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক বিপিএম, পিপিএম এবং খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বিপিএম।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!