বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণায় আগে থেকেই ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর নির্বাচন না করার চূড়ান্ত ঘোষণায় হাফ ছেড়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা অন্য ৪ জনও মেয়র প্রার্থী হিসেবে দুর্বল। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মেয়র পদে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের তেমন আগ্রহ নেই। কিন্তু তারপরও নির্বাচন নিয়ে বিরামহীন প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন তালুকদার আবদুল খালেক।
কেসিসি থেকে জানা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল থেকে কেসিসির বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক করছেন মেয়র। প্রায় প্রতিদিনই নগরীর একাধিক ওয়ার্ডে শিশু খাদ্যসহ বিভিন্ন প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা তুলে দিচ্ছেন তিনি। এছাড়া কেসিসির অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সদস্যদের নিয়ে ঈদের পর পুনর্মিলনী হয়েছে। আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে প্রতিদিনই মতবিনিময় সভা হচ্ছে। এ সময় বক্তৃতায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চাইতে ভুল করছেন না তালুকদার আবদুল খালেক।
এছাড়া দলগতভাবেও প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। গত বুধবার রাতে দলের বর্ধিত সভায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে পৃথক কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র ও ওয়ার্ডভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটিগুলোর কাজ তদারকির জন্য খুলনা-২ ও ৩ আসনে দুই যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ শহিদুল হক মিন্টু ও আশরাফুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, নির্বাচন নিয়ে দলের বেশিরভাগ নেতাই নির্ভার রয়েছেন। কিন্তু মহানগর সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক সর্বাত্মক প্রস্তুতি চালিয়েছেন। দলের নেতাদেরও সক্রিয় হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তার চাপেই অন্যদেরও ছুটতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও কিছু নেতার অসহযোগিতার কারণে ২০১৩ সালের কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে তালুকদার আবদুল খালেক পরাজিত হয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। এজন্য শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী থাকুক বা না থাকুক প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দিচ্ছেন না বর্তমান মেয়র। নির্বাচনী মাঠ সাজানোর কাজও তিনি মনিটর্রিং করছেন।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও চেম্বার কমার্সের সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। সেই হিসেবে নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এখানে কে নির্বাচনে আসুক, না আসুক মুখ্য নয়। আমাদের প্রস্তুতি আমাদেরই নিতে হবে।
সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, আগামী ১০/১১ মে আমি পদত্যাগ করবো। তার আগে সবাইকে নিয়ে একটু বসছি। এটা নির্বাচন নয়, রুটিন কাজের অংশ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। এখন বসে থাকার সুযোগ আছে ? নির্বাচনের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ১২ জুন কেসিনি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন পর্যন্ত মেয়র পদে ৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
তারা হলেন আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা আবদুল আউয়াল, আগুয়ান-৭১ এর আহ্বায়ক মো. আবদুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির এস এম মুশফিুর রহমান ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফফার বিশ্বাস।
খুলনা গেজেট/হিমালয়