প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে চিকিৎসাধীন টাইলস মিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে তাকে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার মান্দারতলা এলাকায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। মৃত টাইলস মিস্ত্রি উপজেলার মান্দারতলা এলকার জনৈক নায়েব মন্ডলের ছেলে লুৎফর রহমান।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে লুৎফর রহমান জোড়াপুকুরিয়া এলাকা থেকে বাড়ি ফেরার সময় মান্দারতলা এলাকার ব্রীজের ওপর পৌছালে ১৫-২০জন লোক তার ওপর হামলা করে। এ সময়ে তারা দেশিয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা করে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হরিণাকু-ু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আশরাফুজ্জামান সজিব জানান, নিহত ব্যক্তির হাত-পা, মাথা, ঘাড়, পিঠসহ দেহের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী ভানু নেছা জানান, তার স্বামী ঢাকায় টাইলস মিস্ত্রির কাজ করতেন। ঈদের আগে তিনি বাড়িতে আসেন। সোমবার তার ঢাকাতে চলে যাওয়ার কথা ছিল। সকালে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফেরার পথে তাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় প্রতিপক্ষরা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় দুটি পক্ষের মধ্যে সামাজিক বিরোধ রয়েছে। এর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম এবং ওপর পক্ষে রয়েছেন খবির উদ্দিন নামে দ্ই ব্যক্তি। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায়ই ওই এলাকায় দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ১ এপ্রিল রবিউল ইসলাম নামে জোড়াপুকুরিয়া এলাকার এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা ও রনি নামে এক যুবককে আহত করে প্রতিপক্ষরা। এরই জেরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাবি করেন কয়েকজন।
নিহতের স্বজন আমিরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে লুৎফর রহমান ঢাকায় টাইলস মিস্ত্রির কাজ করে। ঈদের আগে সে বাড়িতে আসে। সকালে পাশের জোড়াপুকুরিয়া গিয়েছিল। বাড়িতে ফেরার সময় প্রতিপক্ষ সাইফুল কমিশনারের লোকজন তাকে দেশিয় ধারালো অন্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আবু আজিফ বলেন, সামাজিক বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড