মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী কাজীপুর গ্রামের দুই ভাই রফিকুল ও আবুজেল হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রোববার ( ০২ এপ্রিল) দুপুরে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপুতি কুমার বিশ্বাস আদালতে আট আসামির উপস্থিতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। জালাল উদ্দিন নামের এক আসামি পলাতক রয়েছেন।
মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি (পিপি) অ্যাডভোকেট কাজী শহীদুল হক রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের আব্দুল হালিম, আতিয়ার রহমান, শরিফুল ইসলাম, শরিফ, ফরিদ, জালাল উদ্দীন, আজিজুল, মনি এবং দবির উদ্দীন।
মামলার আরও পাঁচ আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেয়।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজীপুর গ্রামের একটি মাঠ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেনসিডিল উদ্ধার করে বিজিবি। বিজিবিকে ফেনসিডিল ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে রফিকুল ইসলাম ও আবুজেলের নামে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে মারধর করেন অভিযুক্তরা। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে রফিকুলকে উদ্ধার করেন। ১৫ জুন রাত ১০টার দিকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য ওই দুই ভাইকে ডেকে নিয়ে যান অভিযুক্তরা। তারপর থেকেই ওই দুজনের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিন ভোররাতে সীমান্তবর্তী কাজীপুর গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত মেইন পিলার ১৪৫ এর সাব পিলারের ৬ এস এর পাশে ওই দুই ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া যায়।
দুই ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের বোন জরিনা বেগম গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত ভার পড়ে তৎকালীন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামানের হাতে।
২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে এ মামলায় গ্রেপ্তার তিনজন আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরে ১৭ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এই মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কাজী শহীদুল হক ও আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট এ. কে. এম শফিকুল আলম।
ফাঁসির সাজা পাওয়া আসামি আব্দুল হালিমের ভাই যুবলীগ নেতা আব্দুল আলিম বলেন, ‘আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট নই। মামলায় কোনো চাক্ষুষ সাক্ষী প্রমাণ নেই। তাছাড়া যে দুজনকে হত্যা মামলার রায়ে আসামিদের সাজা দেয়া হলো, তারা দুই ভাই বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম