বাগেরহাটের ফকিরহাটে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মিজানুর রহমানকে থাপ্পড় ও গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি। রবিবার (০৫ মার্চ) বিকেলে তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আরিফুল ইসলাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানের কাছে ওই প্রতিবেদন জমা দেন।
তবে প্রতিবেদনে তদন্ত কমিটি কী পেয়েছে বা অভিযোগের সত্যতা মিলেছে কিনা সে বিষয়ে কিছু বলেননি তদন্ত কর্মকর্তা এডিএম মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত করেছি। জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর সুযোগ নেই।
তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু তদন্তে কী এসেছে সে বিষয়ে কিছুই বলতে চানতি তিনি। তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়টা এভাবে বলাটা মনে হয় ঠিক হবে না। আমরা (বিভাগীয়) কমিশনার অফিস, জনপ্রশাসন ও কেবিনেটে (মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে) তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। ওখান থেকে আপনারা জেনে তিনি পারবেন।’
তবে তদন্তে কী এসেছে তা বলতে না চাইলেও তিনি বলেন, ‘আমরা নিরপেক্ষভাবে সম্পূর্ণ সততার সাথে তদন্ত করেছি এবং ঘটনায় যার যতটুকু সম্পৃক্ততা তাই উঠে এসেছে।’
এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, ইউএনও মো. মনোয়ার হোসেন ঘটনার পর ওই সাবেক জনপ্রতিনিধিকে ‘থাপ্পড়’ দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও তদন্তে তাকে থাপ্পড়’র দেওয়ার প্রমান মিলেছে।
বুধবার দুপুরের দিকে ফকিরহাট উপজেলার কাঁঠালতলা এলাকায় খুলনা-মাওয়া মহাসড়কে ইউএনওর গাড়িতে ঘষা লাগার অভিযোগে মোটরসাইকেল আরোহী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঘটনাস্থলের কাছে থাকা একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেছে ধরা পড়ে ওই চিত্র। এতে দেখা যায়, বেলা ১১টা ৩২ মিনিটের দিকে মহাসড়ক ধরে ফকিরহাটের দিক দিয়ে ইউএনওর গাড়িটি ফলতিতার দিকে যাচ্ছিল। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে গাড়িটি উল্টোভাবে আবার সেখানে ফিরে আসে। মিজানুর তা দেখে তার মোটরসাইকেলটি নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। পরে ইউএনওর গাড়িটি পাশ কাটিয়ে অতিক্রম করে যাচ্ছিল। এরই মধ্যে গাড়ি থেকে চালক নেমে আসেন এবং তাঁদের মধ্যে কিছু কথা হয়।
একপর্যায়ে ইউএনও গাড়ির পেছন থেকে আনসারের পোশাক পরা এক ব্যক্তি মিজানুরকে টেনে নিয়ে গাড়িতে তুলতে চেষ্টা করে। এ সময় গাড়িতে উঠতে না চাওয়া ওই সাবেক জনপ্রতিনিধিকে ইউএনও এসে দুটি থাপ্পড় দেন। এরপরই দরজা লাগিয়ে গাড়িটি আবারও সামনের দিকে চলে যায়।
ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল ইসলামকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা প্রশাসন।শুক্রবার সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ ওই সাবেক জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ এসজেড