তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত এলাকায় ভূমিকম্পের ১৩ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার বিস্ময়করভাবে এ তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। তুরস্কের স্থানীয় টেলিভিশন এনটিভি ট্রেচারে করে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে তোলার ছবি প্রকাশ করেছে। খবর আল-জাজিরার।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে হওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্প তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। এর কেন্দ্র ছিল তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের ১৭ কিলোমিটার নিচে। ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। কেবল তুরস্কেই মারা গেছেন ৩৯ হাজার ৬৭২ জন। ৫ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে সিরিয়ায়।
এনআরজেড অনলাইন জানায়, বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। তবে ঠিক কতজন নিখোঁজ আছেন, এ তথ্য দুই দেশের কারও কাছেই নেই। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, তুরস্কের দুর্গত এলাকার অবকাঠামো এত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, তা ঠিক করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান এটিকে শতবর্ষে তুরস্কের সবচেয়ে ভয়ানক বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছেন।
ভূমিকম্পের কারণে শত শত শিশু পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় জানান, পরিবার বিচ্ছিন্ন ১ হাজার ৫৮৯টি শিশুর দেখাশোনা করবে সরকার। এ শিশুদের মধ্যে ২৪৭টির পরিচয়ই জানা যায়নি। তিনি জানান, ৯৫৩টি শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্পে তুরস্কের নিহতদের মধ্যে যুদ্ধের কারণে দেশ ছাড়া শত শত সিরীয় রয়েছেন। আশ্রয়শিবিরের নিচে চাপা পড়ে তাদের মৃত্যু হয়।
শনিবার বাব আল-হাওয়া সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে দেড় হাজারের বেশি সিরীয় শরণার্থীর মরদেহ হস্তান্তর করে তুরস্ক। তাদের নিজ দেশ সিরিয়ার মাটিতে কবর দেওয়া হবে। এ ছাড়া বহু সিরীয় শরণার্থী এরইমধ্যে নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। গত বুধবার ১ হাজার ৭৯৫ জন শরণার্থী সিরিয়ায় ফিরে যান।
ভূমিকম্পে নিহতদের মধ্যে ঘানার জাতীয় দলের ফুটবলার ও চেলসির সাবেক খেলোয়াড় খ্রিস্টিয়ান আৎসুও রয়েছেন। শনিবার তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রয়টার্স জানায়, ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূপৃষ্ঠে ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।