উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে ‘ব্রাদার্স ব্রিকস’ নামের একটি ইটভাটা ভেঙে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এই ইটভাটা ভেঙে দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। কোন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে চলছিল এই ইটভাটাটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৩ জানুয়ারি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের শীতলপুর গ্রামে গড়ে ওঠা ব্রাদাস্ বিকস্ ওরফে সিয়াম ভাটায় অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আজাহার আলী। অভিযানকালে তিনি ভাটা কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং অবৈধ এই ইটভাটাটি বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রশাসনের ওই নির্দেশকে অমান্য করে ভাটার কার্যক্রম অব্যহত রাখায় মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আজাহার আলী নেতৃত্বে সাতক্ষীরার বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম ভাটা ভাঙার উদ্যোগ নেন। এসময় এস্কেভেটর (ভেকু মেশিন) দিয়ে অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া শুরু করেন তারা। বুধবার সকালে আবারও বুলডোজার দিয়ে ভাটার সব ধরনের অবকাঠামো ভাঙার কাজ শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আজাহার আলী।
স্থানীয়রা জানান, শীতলপুর গ্রামে আব্দুল ওদুদ ও তার সহোদররা ওই এলাকায় কিছু সরকারি খাস জমি দখল করে অবৈধভাবে ভাটা নির্মাণ করেন। ভাটার কালো ধোয়া এলাকার বায়ুদূষণে মানুষের বসবাসে ব্যাপক সমস্যা দেখা দেয়। ভাটাটি অপসারণের দাবিতে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন করলেও সেটি বন্ধ করা হয়নি। পরবর্তীতে এলাকাবাসী উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত অবৈধবাবে গড়ে ওঠা ইট ভাটাটি অপসারণের নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই আদেশের বিরুদ্ধে ভাটা কর্তৃপক্ষ আপিল করলে বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের চেয়ারম্যানের উপর তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন উচ্চ আদালত। এর পাশাপাশি দুই মাসের মধ্যে ভাটার স্থান পরিবর্তন করার জন্য আদেশ দেয়া হয়। কিন্তু আদেশ অমান্য করে ভাটা মালিকদের নিকট থেকে লীজ নিয়ে প্রবাসী জনৈক আব্দুস সবুর পূর্বের নাম ব্রাদার্স ব্রিকসের স্থলে তার ছেলে সিয়াম এর নাম ব্যবহার করে ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।
কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আজাহার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে অবৈধ ইটভাটাটি ভেঙে দেয়া হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড