খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সংলাপে অংশ নিয়েছে গণফোরাম
  জুলাই-আগস্ট গণহত্যার তথ্য সংগ্রহে সরকারের গণবিজ্ঞপ্তি জারি
  গণফোরাম, এলডিপিসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও জোটের সাথে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ বিকালে

পিতা-পুত্র হত্যায় স্বীকারোক্তি দেয়া আসামীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রকাশ্যে!

নিজস্ব প্রতিবেদক ও তেরখাদা প্রতিনিধি

খুলনার তেরখাদা উপজেলার পহরডাঙ্গা এলাকায় পিতা-পুত্র হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়া সাত আসামী মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে এলাকায়। হাইকোর্ট থেকে জামিনের ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে কারাগার থেকে মুক্তিলাভ পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি খুলনাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৭টার খবরে বেসরকারি টেলিভিশন ‘চ্যানেল টোয়েন্টিফোর’ও বিশেষ প্রতিবেদন সম্প্রচার করে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উচ্চ আদালতে ওই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান দ্বীন ইসলামের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়া আসামীরা জামিনে মুক্তি পেয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। তখনি আদালতের নজরে আসে বিষয়টি। আদালতের ভুয়া জামিনের কাগজপত্র দেখিয়ে মুক্তিলাভ করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে।

আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া জামিনপ্রাপ্তরা হল- সাইফুল শেখ, খালিদ শেখ, আব্দুর রহমান, জমির শেখ, হোসেন শেখ, এস্কেন শেখ ও আইয়ুব শেখ। এরমধ্যে সাইফুল, খালিদ, আঃ রহমান ও জমির শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দীতে আদালতকে জানিয়েছিল- স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলামের নির্দেশে তারা পিরু শেখকে হত্যার উদ্দেশ্যে সেই রাতে গিয়েছিল। পিতাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসায় নাঈম শেখ খুন হয়। চাঞ্চল্যকর মামলাটিতে সম্প্রতি ওই সাত আসামী জামিন মুক্তি লাভ করলেও ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলাম এখনো কারাগারে। ফলে বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত্ব, ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৩টার দিকে তেরখাদার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের পহরডাঙ্গা গ্রামে জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরধরে নাঈম শেখ নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এঘটনার পরদিন ৮ আগস্ট নিহতের মা মাফুজা বেগম বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২জনের বিরুদ্ধে তেরখাদা থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই ঘটনায় গুরুতর জখম নাঈমের পিতা পিরু মিয়া শেখ (৫৫) আড়াই মাস পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে মামলাটি ডবল হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

সূত্রমতে, গেল বছরের ২১ আগস্ট দুপুরে এমামলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলাম মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থ জোগানদাতাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আসামীদের স্বীকারোক্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত দা, বল্লম ও দুর্বৃত্বদের জুতা নাঈমের বাড়ির পেছনের খাল থেকে জুতা উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা জেলা ডিবি’র ওসি তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছিলেন, এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাগলদাহ ইউনিয়নে বংশগতভাবে পর্যায়ক্রমে একটা পূর্ব শত্র“তা চলে আসছিল। এ শত্র“তার জেরধরে জমি দখল ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে নাঈম শেখ ও তার বাবা পিরু আলী শেখকে হত্যার মূল নকশা তৈরি করেন প্রতিপক্ষ। তবে হত্যা মিশনে তিনি নিজে না থেকে কিলিং মিশনের একটি টীম গঠন করে অর্থ যোগান ও পরিকল্পনা করে দেন অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান। পরে পিতাপুত্র হত্যা মামলার মূল আসামীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে দফায় দফায় আন্দোলন করে এলাকাবাসী। সর্বশেষ, গত বছরের ২৫ আগস্ট জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে ছাগলাদাহ ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলামের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে তেরখাদাবাসী। পক্ষান্তরে ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলামকে নিরাপরাধ দাবি করে মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করে তারই অনুসারীরা।

 

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!