বিরোধী দলের হরতাল অবরোধ কর্মসূচি নেই। করোনার প্রকোপ তেমন নেই। জন ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক। ট্রাক টার্মিনাল কাঁচাবাজারে কৃষি পণ্যের আমদানি স্বাভাবিক। তারপরও নতুন বাজার, বড় বাজার ও মিস্ত্রিপাড়া বাজারে মন্দা ভাব। ক্রেতার পণ্য কেনার পরিমাণ কমেছে।
নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিন স্থানীয় বাজারে আলু, পেঁয়াজ, বরই ও কুমড়ার বড়ি আমদানি স্বাভাবিক। মনিরামপুর, কেশবপুর, ডুমুরিয়া ও ফুলতলা থেকে শীতের কৃষি পণ্য আসছে। পাইকারি ব্যবসায়ী জবেদ আলী এন্ড কোম্পানির প্রতিনিধি গিয়াস কামাল জানান, বগুড়ার আলু আমদানি কমেছে রাজশাহীর আলুও আসা কমেছে। গত দুই বছরে করোনার কারণে দাম না পাওয়ায় সেখানকার চাষিরা কম আলু চাষ করেছেন। এবার চাহিদার তুলনায় খুলনার পাইকারি বাজারে আলু আসার পরিমাণ বেশ কমেছে। গেল বছর ডায়মন্ড জাতের আলু প্রতি কেজি ভরা মৌসুমে ৩০ টাকা বিক্রি হলেও আজ প্রতি কেজি ২০ থেকে ২১ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গেল বছর প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ট্রাক আলু আসলেও গেল শনি ও রবিবার স্থানীয় কদমতলা বাজারে পাঁচ ট্রাক আলু এসেছে।
বড়বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, নতুন আলু বাজারে আসার পর প্রতি কেজি ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও গতকাল ২৪ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গেল বছর প্রতিদিন ৬০ কেজি আলু বিক্রি হলেও আজকের বিক্রির পরিমাণ ১০ কেজি।
খানজাহান আলী বাণিজ্য ভান্ডারের বিক্রেতা মোহাম্মদ তানজির জানান, ভারত থেকে গত এক সপ্তাহে খুলনার বাজারে চার ট্রাক আদা এসেছে। বিক্রির পরিমাণ কম। গেল বছর ১২০ টাকা দাম থাকলেও এবার প্রতি কেজির মূল্য ৯০ টাকা তারপরেও ক্রেতা নেই।
ভ্যানে ফেরিওয়াল রূপসার জোয়ার গ্রামের মাসুদুর রহমান জানান, ২০২২ সালে প্রতি কেজি আলুর মূল্য ছিল ১৪ থেকে ১৫ টাকা এবার একই আলুর দাম কেজি প্রতি ৬ টাকা বেড়েছে।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে আসা গুড় বিক্রেতা রাকিব ইসলাম জানান, গত চার দিনে একশ কেজি পাটালি গুড় বিক্রি করেছেন। লাভ হয়েছে ৪০০০ টাকা। কিন্তু গত বছর লাভের পরিমাণ বেশি ছিল। তিনি জানান, পাটালি গুড় প্রকারভেদে ১৬০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মিস্ত্রিপাড়া বাজার ও নতুন বাজারে শীতের সবজির আমদানি স্বাভাবিক। কুমড়োর বড়ি প্রতি কেজি মূল্য দেড়শ থেকে ২০০ টাকা। তারপরেও বিক্রির পরিমাণ বেশ কম। চুকনগর, কপিলমুনি ও তালা থেকে বস্তা বোঝাই করে কাঁচা হলুদ আসছে এরও ক্রেতা কম।
ক্যাব এর খুলনা প্রতিনিধি আব্দুস সালাম মন্টু তথ্য দিয়েছেন, গেল শীতের তুলনায় এবার অধিকাংশ পণ্যের ১১ শতাংশ মূল্য বেড়েছে। মূল্য বেড়েছে ডিম, কাঁচা ঝাল ও শাক সবজিরও। এখন কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। ইজিবাইক চালকরা অনেকেই গ্রামে ফিরে গেছেন। কাঙ্খিত আয় নেই, অথচ জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম