দাওয়াতে তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বিদের তাৎপর্যপূর্ণ বয়ান, তালিম-তাশকিল এবং মুসল্লিদের নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আসগারের মধ্যদিয়ে শনিবার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। আজ বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে কোনো এক সময় আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটছে। মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহম্মদ জুবায়ের।
আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরুব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান বলেন, ইনশাআল্লাহ, আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমা শেষ হবে।
মুসল্লিতে ঠাসা ময়দানে অবস্থানের সুযোগ না থাকলেও বয়ান শুনতে ও অন্যান্য কার্যক্রমে অংশ নিতে দ্বিতীয় দিনেও ইজতেমাস্থলে মুসল্লিরা আসেন। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে। সকালের ঠান্ডা বাতাস ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে মুসল্লিদেরকে অধিক মনযোগ সহকারে মুরব্বিদের বয়ান শুনতে দেখা গেছে।
ইজতেমা উপলক্ষ্যে শিল্পনগরী টঙ্গী এখন ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। এদিকে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে ৩ জন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত ময়দানে সাত মুসল্লি ইন্তেকাল করলেন।
দ্বিতীয় দিনে বয়ান করলেন : বাদ জোহর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ফারুক। বাদ আসর ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান। বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। এ ছাড়াও ওলামা-মাশায়েখদের উদ্দেশে সকাল ১০টায় বয়ান করেন মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা, আরবি তাঁবুতে বয়ান করেন মাওলানা খুরশিদ আলম, মুফতি শফি ও মাওলানা আহমদ লাট। বধির সাথীদের উদ্দেশে বয়ান করেন সানোয়ার হোসেন, নিয়াজ মাহমুদ ও মাওলানা আমির হুসেন।
বিদেশি মুসল্লি : ইজতেমার প্রথম পর্বে শনিবার বিকাল পর্যন্ত সৌদি আরব, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, সিরিয়া, চাঁদ প্রজাতন্ত্র, ইরানসহ বিশ্বের ৬৮ দেশের প্রায় ৫ হাজার ৫২৬ জন মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদেশি নিবাসে স্থাপিত গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কন্ট্রোলরুমের এক কর্মকর্তা। জিএমপি কন্ট্রোলরুম সূত্রে জানা যায়, ইংরেজি ভাষাভাষি দেশের ৮৯৬ জন, আরবি ভাষার ২১০ জন, ভারতের কলকাতা, আসাম, দিল্লি থেকে ২ হাজার ৬০৫ জন ময়দানে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া হিন্দি ও উর্দু ভাষাভাষি ১ হাজার ৮১৫ জন মুসল্লি তাদের নির্ধারিত নিবাসে অবস্থান করে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল রয়েছেন। আজ রোববার আখেরি মোনাজাতের পূর্বে বিদেশি মেহমানের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম জানিয়েছেন।
বিদেশি মুসল্লিদের শুকরিয়া আদায় : ভারতের গুজরাট থেকে আসা মোহাম্মদ তৈয়ব ও সৈকত বলেন, আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের ইজতেমা ময়দানে আসার। মহান আল্লাহ সেই আশা পূরণ করেছেন। এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। আমরা এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে সারা পৃথিবীতে যেন ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে পারি সেই দোয়া চাই।
বধিরদের জন্য বয়ান : বিশ্ব ইজতেমায় আগত বধির (কানে শোনে না এমন) মুসল্লিদের জন্য তুরাগ নদের পশ্চিম পাড়ে নির্ধারিত খিত্তায় জামাতবদ্ধ করে বয়ান শোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে বয়ান বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।