৭ জানুয়ারি দুপুরে পাওনা চার হাজার টাকা আনতে এনজিও কর্মী তহমিনার বাসায় যান ফাতেমা বেগম। এরপর থেকে আর তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়। খুলনা শহরের সব স্থানে খোঁজ নেয়া হলেও কোথাও ফাতেমা বেগমের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে সন্ধান মিলেছে পুটিমারী বাজার সংলগ্ন নদীতে ভাসমান অবস্থায়। তবে জীবিত নয়, মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে খুলনা থানা পুলিশ।
এদিকে ফাতেমা বেগমের নিখোঁজের বিষয়ে জানতে এনজিও কর্মী তহমিনা ও তার স্বামীকে ডাকলে তহমিনা দম্পত্তি ফাতেমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশকে জানায়। এ ঘটনায় তারা বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট তরিকুল ইসলাম।
ফাতেমা হত্যাকান্ডের বিবরণ জানিয়ে খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) নিমাই চন্দ্র কুন্ডু বলেন, নবলোক এনজিওর কর্মী তহমিনা। ৪০ হাজার টাকা এনজিও থেকে লোন করিয়ে দেবে বলে ভিকটিমের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু এনজিও থেকে লোনের টাকা পাস না হওয়া ফাতেমা বেগমের সাথে নয়ছয় করতে থাকে সে। ৭ জানুয়ারি দুপুরে খাবার শেষ করে ফাতেমা বেগম ৪ হাজার টাকা ফেরত নেওয়া আনতে নগরীর দারোগা পাড়ায় তহমিনার বাসায় যান। এ সময়ে টাকা নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতান্ড হয়। একপর্যায়ে তহমিনা পাশে থাকা ইট দিয়ে ফাতেমার মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। এ সময়ে তহমিনা ভয়ে ঘুমন্ত স্বামী ফারুখকে ডেকে তোলে। লাশ কী করা হবে এ নিয়ে তারা ভাবতে থাকতে। একসময়ে ঘরের মধ্য থেকে প্লাস্টিকে বস্তা এনে ফাতেমা বেগমের লাশ পেচিয়ে পুটিমারী নদীতে ফেলে দেয়। নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়। ফাতেমা বেগমের সন্ধানে এনজিও কর্মী তহমিনাদের বাড়ির আশপাশের বাড়ির কয়েকটি সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বুধবার তাদের থানায় তলব করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা উভয় ফাতেমা বেগমকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক সকলে নদীতে স্থানীয় ডুবরী নামানো হয়। কিন্তু তার মরদেহ পাওয়া যায়নি। বিকেলে স্থানীয়রা মহিলার লাশ ভাসতে দেখে থানায় খবর দিলে ফাতেমা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকান্ডে নিজেদের দায় স্বীকার করে তহমিনা দম্পত্তি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত।
খুলনা গেজেট/ এসজেড