সোমবার (০৯ জানুয়ারি) সূর্য্যের দেখা মিললে সহসা কমছে না শীতের প্রকোপ। সকাল থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলে জীবনযাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে গরম কাপড় কিনতে নগরীর বিপণী বিতানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সবচে বেশী লোক সমাগম হয়েছে নগরীর গরীবের মার্কেটখ্যাত ফুটপথ ও পুরাতন মার্কেটে।
বেলা ১১টার দিকে এরমধ্যে দেখা যায় দু’সন্তানকে নিয়ে এক দম্পত্তি এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছিলেন; কিন্তু সাধ আর সামর্থ্যরে মিলাতে না পারায় কিছুটা হতাশ হচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, তাঁর নাম ছগির মিয়া। বাড়ি রূপসা উপজেলার নৈহাটি গ্রামে। পেশায় ভ্যান চালক। গরম কাপড় কিনতে হবে, কিন্তু দাম বেশী হওয়ায় তারা খালি হাতেই বাড়ি ফিরছেন। শুধু ছগির মিয়াই নন, তাঁর মতো অনেকেই গরমের কাপড় কিনতে এসে হতাশ হয়েছেন।
শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) থেকে সারা দেশের সাথে খুলনার তাপমাত্রা কমতে থাকে। শীতে কাহিল হয়ে পড়ে মানুষ। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েন বিপাকে। পেটের টানে তাদের কাজে যেতে হয়েছে। শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে কেউ কেউ মোড়ে মোড়ে আগুন জ¦ালিয়ে উত্তাপ নিয়েছেন। ফলে শীত থেকে রক্ষায় যার যার সাধ্যমত ছুটছেন বিপণী-বিতানে। সোমবার সকালে নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটে ছগির মিয়া বলছিলেন তাঁর কষ্টের কথা। তিনি বলেন, সংসারে যা আয় করেন তা দিয়ে কোন রকমের চলছে। কিন্তু গত কয়েকদিন দেশে ক্রমাগত শৈত্য প্রবাহ থাকায় তিনি ভ্যান চালতে পারেননি। তাই শীতের সময় ভ্যান চালনোর জন্য এ দিন সকালে তার মার্কেটে আসা। গরম কাপড় পচ্ছন্দ হয় কিন্তু দামের পকেটের সাথে এটে উঠতে পারিনি। গরম কাপড় না কিনেই বাড়ি ফিরছি।
ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী ইসমাইল বলেন, করোনার পর থেকে সবকিছুর দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। দাম বেড়েছে পুরোনো কাপড়ের দাম। আগে কাপড়ের যে বান্ডিল ৭/৮ হাজার টাকায় কিনতাম। তা এখন ১৩ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। সেজন্য জ্যাকেট, হুডি ও সোয়েটারের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা যদি এর দাম বৃদ্ধি করে তাহলে আমাদের কিছু করার থাকেনা।
সরকারি আযমখান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার সুনু বলেন, সব জিনিষের দাম ব্যাপক আকারে বেড়েছে। ভেবেছিলাম বড় বড় বিপনী বিতানগুলো থেকে জেলা স্টেডিয়াম মার্কেটে দাম কম। কিন্তু এখানে আসার পর জানতে পারলাম এখানেও একই দাম। তাই বেশী না কিনে কম কিনে ফিরছেন তিনি।
পশ্চিম বানিয়াখামার এলাকার বাসিন্দা গোলাম রসুল বলেন, জব্বার স্মরণীতে এসে জ্যাকেটের দাম কম পাব, কিন্তু নতুনের চেয়ে এখানে দাম বেশী। তাই তিনি খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন।
এছাড়া জব্বার স্মরণী, নিউমার্কেট, শিববাড়ি মোড়, মজিদ স্মরণীসহ বিভিন্ন বিপণীতে নি¤œ ও মধ্যবিত্তরা অনেকেইে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন।
খুলনা গেজেট/ কেডি