পাকিস্তানের জ্বালানি খাত ঋণের জালে জর্জরিত। সেই সঙ্গে দেশটির অর্থনৈতিক সংকটও দিন দিন বাড়ছে। এই সংকট মোকাবিলায় জ্বালানি খরচ কমাতে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সরকার। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ঘোষণা দিয়েছেন, দেশটির সব বিপণিবিতান রাত সাড়ে ৮টায় বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া বিয়ের অনুষ্ঠানের হলগুলো ফাঁকা করতে হবে রাত ১০টার মধ্যে।
এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার ‘ন্যাশনাল এনার্জি ইফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন প্ল্যান’ পাস করেছে। জ্বালানি খরচ কমানোর জন্য এই পরিকল্পনা পাস করেছে তারা।
সরকারের এই পরিকল্পনা নেওয়ার অন্যতম কারণ হলো দেশটির রিজার্ভ ফুরিয়ে আসছে। সরকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ডিসেম্বরে ৫৮০ কোটি মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে দেশটির রিজার্ভ। হিসাব অনুযায়ী, গত আট বছরের মধ্যে রিজার্ভ তলানিতে এসে ঠেকেছে। এই রিজার্ভ দিয়ে এক মাসের মতো পণ্য আমদানি করা যেতে পারে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে যে ঋণ আসার কথা ছিল, তা–ও দেরি হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে সরকার এই পথে হাঁটছে।
পাকিস্তানের পত্রিকা ডনের খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশটির জ্বালানি খাতে ঋণের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ২৫৩ ট্রিলিয়ন (পাকিস্তানি) রুপি। বছর শেষে এটা বেড়ে হয়েছে ২ দশমিক ৪৩৭ ট্রিলিয়ন রুপি। অর্থাৎ এ সময়ের ব্যবধানে ঋণের পরিমাণ ১৮ হাজার ৫০০ কোটি রুপি বেড়েছে। ফলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের দেনা মেটাতে পারছে না। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জ্বালানি সরবরাহকারীদের দেনা মেটাতে পারছে না।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, জ্বালানি খরচ কমাতে রেস্তোরাঁও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বণিক সমিতির প্রতিনিধিরা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেননি। তবে এরপরও সরকার দোকানপাট দ্রুত বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খাজা আসিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সরকারি দপ্তরগুলোকে বিদ্যুৎ খরচ ৩০ শতাংশ কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।