খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী এলাকার ঝুলন্ত পাড়ায় প্রায় ৪ শত পরিবারের গৃহহীন মানুষ মানবতার জীবন যাপন করছে। তবে ভুক্তভোগীদের দাবি পুনঃবাসনের।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুতারখালী ইউনিয়নের ৮ ও ৯নং ওয়াডে কালবগী ঝুলন্ত পাড়ায়, সহায় সম্বলহীন অসহায় মানুষ গুলো খরস্রোতা শিবসা নদীর তীরে টোংঘর বেঁধে নিয়ে জীবন যাপন করে আসছে। তাদের নেই কোন যাতায়াতের রাস্তা, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা করার সুব্যবস্থা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা। এখানে বসবাস কারী মানুষ নদী ও জঙ্গলে মাছ,কাকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কথা হয় ৮ নং ওয়াডের বসবাসকারী আবদুর রউফ সরদারের (৬০) সাথে। তিনি বলেন, আমার বাব দাদারা এখানে বসবাস করত। তখন আমি আমার বাবার সাথে জমিতে ধান রোপন করতে গেছি। এখন তা শুধুই স্মৃতি। শিবসা নদীর খরস্রোতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ১০/১২ বার ভাঙনের কারণে ঘর সরাতে হয়েছে। এখন আর জায়গায় জমি কিছুই নেই।
বিধবা সকিনা বেগম (৫৫) জানান, তার একটি পাগল ছেলেকে নিয়ে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। তবে জায়গা জমি না থাকার কারণে সরকারের কাছে পুনবাসনের জন্য দাবি করছি।
৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নিমাই রায় বলেন, আমার ওয়ার্ডে বেশকিছিু মানুষের জায়গা জমি আছে। যাহা ৩২ নং পোল্ডারের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চায়না কোম্পানি তাদেরকে ভেড়ি বাঁধের বাইরে রেখে রাস্তা করার জন্য প্রায়ই ৪০০ শত বিঘার উপরে জমিতে ধান রোপন করতে পারছে না। শিবসা নদীর জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন হাবুডুবু খেতে হচ্ছে। বাব-দাদার ভিটা বাড়ী কিছুই নেই। জমি থাকতেও ফসল উৎপাদন করতে পারছে না তারা।
এছাড়াও নদীভাঙ্গনের কারণে তার ওয়ার্ডে অনেক মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে হচ্ছে নৌকায় চড়ে। সরকারি স্কুল, মন্দির, মসজিদ, ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র যাহা বর্তমানে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে।এলাকার মানুষ কোন মতে টোংঘর বেঁধে ছেলে সন্তান নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে ।
তিনি আরও বলেন, ঝুলন্ত পাড়ায় বসবাসকারী মানুষের জন্য মৌলিক অধিকারের কোনটাই সঠিক নেই। এলাকায় কোন মানুষ হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে নিয়ে যেতে হয় প্রায়ই ৩০ কিঃ মিঃ দুরে দাকোপ হাসপাতালে।
দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান বলেন, বিষয় টি নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের নিকট মাসিক সমন্বয় সভায় কথা বলবো। সরকারের কাছে পুনঃ বাসনের জন্য জোর দাবি জানিয়েছে এলাকার অসহায় ছিন্ন মুল ভুক্তভোগীরা।
খুলনা গেজেট/ এমএম