এক ম্যাচ হাতে রেখে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। ২০১৫ সালের সেই ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর দ্বিতীয়বারের মতো ভারতকে ধরাশায়ী করল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিলো লাল-সবুজ বাহিনী। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ৫ রানে।
ব্যাট হাতে মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর পর আঙুলে চোট নিয়েই খেলতে নেমে পড়েছিলেন টিম ইন্ডিয়া কাপ্তান রোহিত শর্মা। ২৭২ রানের টার্গেট তাড়ায় ২৬৬ রানে ইনিংস গুটায় ভারত। শেষ বলে ছক্কার হাঁকাতে না পারায় লড়াই করেও হেরে যায় ভারত।
সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমে চাপে পড়ে ভারত। ২৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪ দিয়ে ইনিংস শুরু করেন বিরাট কোহলি। তার ব্যাটের ধার দেখে মনে হচ্ছিল আজ বড় কোনো ইনিংসই ভারতকে উপহার দেবেন তিনি। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসা এবাদত সে সুযোগ দেননি কোহলিকে। এবাদতের করা শর্ট লেংথের পুল করতে গিয়ে ইনসাইড-এজে বোল্ড হন কোহলি। বলের গতিতে উপড়ে যায় স্টাম্প।
কোহলিকে হারানোর ধাক্কা সামলে না উঠতেই শিখর ধাওয়ানকে হারায় ভারত। তৃতীয় ওভার আক্রমণে আসা মুস্তাফিজুর রহমানের স্লো বাউন্সারে ভড়কে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে নেন ধাওয়ান। ১০ বলে ১ চারের মারে তিনি ৮ রান করেন।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন শ্রেয়াস আইয়ার ও ওয়াশিংটন সুন্দর। তবে তাদের জুটিকে স্থায়ী হতে দেননি সাকিব আল হাসান। ইনিংসের দশম ওভারে আক্রমণে এসেই সুন্দরকে মিডউইকেট লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করেন সাকিব।
শ্রেয়াসের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়বেন তিনি। ওয়াশিংটনের সঙ্গে তার জুটিতে উঠেছে ১০১ বলে ১০৭ রান। তবে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে মিডঅফে আফিফের হাতে ধরা পড়লেন। সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ১০২ বলে ৮২ রান। পথের কাঁটা সরাতে আবারও ত্রাতা সেই মিরাজ।
এর আগে ইনিংসের ১৯তম ওভারে লোকেশ রাহুলকেও ফিরিয়েছিলেন। নিচু হওয়া বলটা আড়াআড়ি খেলতে গিয়েছিলেন লোকেশ রাহুল, তবে নাগাল পায়নি তার ব্যাট। প্যাডে আঘাত করার পর রাহুল নিজেও জানতেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে। আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্ত রিভিউ করারও দরকার মনে করেননি। মিরাজের ফাঁদে পড়ে ২৮ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন রাহুল।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই বাংলায় আরেকটা ব্লকব্লাস্টার ম্যাচের সাক্ষী হলো ক্রিকেটবিশ্ব। টস জিতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা। ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে আশার আলো দেখায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ জুটি।
সপ্তম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ১৬৫ বলে ১৪৮ রানের অবিশ্বাস্য জুটি গড়েন মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ২১৭ রানে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। তার আগে ৯৬ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৭৭ রান করেন টি-টোয়েন্টি দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
রিয়াদ আউট হওয়ার পর নয় নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা নাসুম আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে শেষ ২৩ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো পার্টনারশিপ গড়েন মিরাজ। এই জুটিতেই মেইডেন সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ৮৩ বলে ৮টি চার আর ৪টি ছক্কার সাহায্যে ক্যারিয়ার সেরা ১০০ রান করেন মিরাজ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত ফেব্রুয়ারিতে ৮১ রান ছিল তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।
খুলনা গেজেট/ এমএম