শিক্ষাক্ষেত্রে সে এক উদার বাবা। সন্তানদের জন্য সব কিছু উজাড় করে দেন কৃষক সঞ্জয় রায় (৫৮)। খেয়ে হোক, না খেয়ে হোক ছেলে-মেয়েদের সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে। তাই জীবনে যা আয় তার বেশীর ভাগ ব্যয় করেন সন্তানদের লেখাপড়া জন্য। সে কারণে সঞ্জয় পরিবারের লোকজনের থাকার একটি ঘর বাধতে পারেননি।
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সাবোখালী গ্রামে বাপ-দাদার তৈরি করা ভাঙাচোরা, জীর্ণশীর্ণ ঘরে গুটি-সুটি হয়ে বসবাস করেন ৬ সদস্যর পরিবার নিয়ে। তাতে কোন আক্ষেপ নেই সঞ্জয়ের। কারণ তাঁর কষ্ট সার্থক করেছে সন্তানেরা। এই জর্ণশীর্ণ ঘরে এবার সাফল্য বয়ে এনেছে ছোট ছেলে সাগর রায়। সে সাবোখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর, ২০২২) দুপুরে সঞ্জয় রায় জানান, তিন ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী অনিমা রায়কে নিয়ে তাঁর পরিবার। কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বড় ছেলে সজল রায় অভাবে জন্য বেশীদূর লেখাপড়া করতে পারেনি। মেঝে ছেলে নয়ন রায় ঢাকা তেজগাঁও কলেজে ইংরেজীতে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ে। ছোট ছেলে সাগর রায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। একমাত্র মেয়ে দেবী রায় সাবোখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী। ছোট ছেলে সাগর তাঁর সাথে নিয়মিত জমিতে কাজ করত। কাজ করেও সে কোন সময় লেখাপড়ায় ফাঁকি দিতো না। ছেলের সাফল্যে সে ও তাঁর স্ত্রী খুুব খুশি। তাঁদের কষ্ট সার্থক হতে চলেছে। কারণ তিনি যা আয় করে তার ৭৫ ভাগ ব্যয় করেন সন্তানদের লেখাপড়া জন্য।
সাগর রায় জানায়, বাবা তাদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তাই বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে চায় তারা। এ জন্য পড়াশুনার কোন বিকল্প নেই। ভবিষ্যতে সে বিজ্ঞান বিভাগেই পড়তে চায়।
খুলনা গেজেট/ টি আই