একের পর এক ঋণ কেলেংকারির ঘটনায় আমানত নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ইসলামী ব্যাংকের খুলনার গ্রাহকরা। তারা নানাভাবে ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা জানার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে ব্যাংকে যাদের বড় আমানত রয়েছে তাদের উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছ থেকে চট্টগ্রাম ভিত্তিক এস আলম গ্রুপ একাই ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। এছাড়া কাগুজে প্রতিষ্ঠান খুলে নাবিল গ্রুপ নামের আরেকটি কোম্পানিসহ ৮ প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক থেকে তুলে নিয়েছে ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর বাইরে নামে-বেনামে বিপুল অংকের অর্থে সরিয়ে নেওয়ার তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
ব্যাংকটি থেকে জানা গেছে, ‘জামায়াতমুক্ত’ করার নামে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। এরপর জামায়াত সংশ্লিষ্টদের ব্যাংকটির বিভিন্ন পদ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপরই ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গ্রুপটির এভাবে বিপুল অঙ্কের ঋণ নেওয়া শুরু করে।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে ইসলামী ব্যাংকের ঋণ কেলেংকারি নিয়ে গণমাধ্যমে একের পর এক খবর আসছে। বিশেষ করে কাগুজে ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে কিভাবে ব্যাংকের টাকা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে তা’ জানতে পেরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন গ্রাহকরা। বাংলাদেশের সেরা এবং দক্ষিণ এশিয়ার নাজুক অবস্থায় আফসোসও করেছেন অনেকে।
নগরীর শেখপাড়া এলাকার এক গৃহিনী জানান, অনেক আগে থেকেই ইসলামী ব্যাংকে আমানত রয়েছে। পত্রিকায় যে সব সংবাদ দেখছি, তাতে টাকা ব্যাংকে রাখা নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে না।
নগরীর বয়রা এলাকার আরেক গৃহিনী জানান, স্বামীর পেনশনের পুরো টাকাই ইসলামী ব্যাংকে আমানত রাখা। টাকা ফেরত পাব কিনা জানতে কয়েকজনকে ফোন দিয়েছি। কেউ সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছে না। এছাড়া প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ ফোন করে জানতে চাইছেন আমানতের বিষয়ে কী করবেন ?
খুলনা মহানগরীর ডাকবাংলায় অবস্থিত ইসলামী ব্যাংকের খুলনা শাখা এবং কালিবাজার রোডে অবস্থিত বড় বাজার শাখায় গিয়ে দেখা গেছে, স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে।
বড় বাজার শাখার প্রধান ও ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাদেক আলী খুলনা গেজেটকে বলেন, ব্যাংকে তারল্যের তেমন সংকট নেই। গ্রাহকরাও কেউ আমানত তুলতে আসেননি।
খুলনা শাখার ম্যানেজার ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ইয়াকুব আলী খুলনা গেজেটকে বলেন, অনেকে ফোন করে ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা জানতে চাইছেন। এই সংখ্যা খুব বেশি না। ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে। আমানত নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
খুলনা গেজেট/ এইচ এইচ/ এসজেড