খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। নির্বাচনে মোট ১৪টি পদেই তারা জয় পেয়েছেন। শনিবার নির্বাচনী আচারণবিধি ভঙ্গের অভিযোগের কোন প্রতিকার না পেয়ে সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সদস্যরা নির্বাচন বর্জন করেন। তারপরও ওই পরিষদের সদস্যরা নির্বাচনে ভোট পেয়েছেন। এ নির্বাচনে ভোটের প্রাপ্ত ফলাফলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত ফলাফলে জানা গেছে, সভাপতি পদে এড. সাইফুল ইসলাম ১০৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। অপর প্রার্থী এড. শরিফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার খোকন পেয়েছেন ৭২ ভোট। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ৯৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তারিক মাহমুদ তারা। অপর প্রার্থী এড. এ কে, এম শহিদুল আলম শহিদ পেয়েছেন ৯২ ভোট।
বিজয়ী অন্যান্যরা হলেন, সহ সভাপতি এ, কে এম মিজানুর রহমান (৯৬৫ ভোট) ও শিরিন আক্তার পপি (৯৫৪), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তমাল কান্তি ঘোষ (৯৮৫), লাইব্রেরি সম্পাদক কাজী সাইফুল ইমরান (৯২৯), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো: আসাদুজ্জামান গাজী মিল্টন (৯৮১) এবং সদস্য পদে ওমর ফারুক রনি (১০১১), সরদার আশরাফুর হমান দিপু (৯৬২), এস, এম আব্দুস সাত্তার (৯৫৭), প্রজেশ রায় (৯২৮), মো: মনিনুর ইসলাম মনির (৯১২), সাবিরা সুলতানা হ্যাপি (৯০২), খাদিজা আক্তার টুলু (৮৫৮) ভোট।
কমিশনের দেয়া তথ্যানুযায়ী নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৩৮৭ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেন ১ হাজার ১৮৪ জন। রোববার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ চলে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত।
নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন মোল্লা লিয়াকত আলী এবং সদস্য হিসেবে মো: আহাদুজ্জামান ও নিমাই চন্দ্র রায়।
এদিকে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ভোট বর্জন, ভোট কেন্দ্রে না গেলেও নির্বাচন কমিশন দ্বারা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বোচ্চ ভোট প্রয়োগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন খুলনা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেছেন এক তরফা ভোটের ফল কারচুপি করে সর্বোচ্চ ১১৮৪ ভোট প্রয়োগ দেখিয়ে তথাকথিত নির্বাচন কমিশন বেহায়াপনার রেকর্ড গড়েছেন।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভোট কেন্দ্রের মধ্যে বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থাকতে পারবেন না বলে দাবি জানালেও কমিশন সে দাবির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুগুলি দেখিয়েছেন। বাধ্য হয়ে ৩ সদস্যের কমিশন থেকে এক সদস্য পদত্যাগ করেছেন। একইভাবে আইনজীবী ঐক্য পরিষদ মনোনীত সভাপতি প্রার্থী শরিফুল ইসলাম জোয়াদ্দার খোকন ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এ কে এম শহিদুল আলমসহ পরিষদের সকল প্রার্থী লিখিতভাবে নির্বাচন বর্জন করেন। কিন্তু একতরফা নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট প্রয়োগ দেখানো শুধু লজ্জাজনকই না, খুলনা আইনজীবী সমিতির বিগত নির্বাচনী ঐতিহ্যে কলঙ্কের কালিমা লেপনের সামিল। আইন পেশার মত একটি মহৎ পেশার প্রতিনিধি নির্বাচনে এহেন ঘটনা জনমনে নানা প্রশ্নে জন্ম দিয়েছে। খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির ১৪০ বছরের ইতিহাসে কোন প্যানেলের সকল সদস্য বর্জনের ঘটনা পূর্বে কখনো ঘটেনি। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে হাস্যকর নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিদাতারা হলেন, সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সিনিয়র কো-কনভেনর এড. গাজী আব্দুল বারী, কো-কনভেনর এড. লতিফুর রহমান লাবু, কো-কনভেনর এড. আক্তার জাহান রুকু, কো-কনভেনর এড. শহিদুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সভাপতি এড. মাসুদ হোসেন রনি, সাধারণ সম্পাদক এড. গোলাম মাওলা, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি যথাক্রমে এড. নরুল হাসান রুবা, এড. বজলার রহমান, এড. এস আর ফরুক, এড. আব্দুল মালেক, এড. আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু, এড. মো. ইউনুস, এড. শেখ আব্দুল আজিজ, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে এড. মাসুম রশিদ, এড. মশিউর রহমান নান্নু।
আরও নিন্দা জানিয়েছেন এড. তৌহিদুর রহমান চৌধুরি তুষার, এড. কনিজ ফাতেমা আমিন, এড. তছলিমা খাতুন ছন্দা, জাতীয়তাবাদী হিন্দু আইনজীবী ঐক্য পরিণদেও সভাপতি এড. সত্যগোপাল ঘোষ, এড. জয়দেব সরকার, এড. মঞ্জুর আহমেদ, এড. চৌধুরী আব্দুস সবুর, এড. খালিদ হাসান জনি প্রমূখ।