আধুনিকতার সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতাগুলো। এর মধ্যে অন্যতম প্রতিযোগিতা হলো নৌকা বাইচ। হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য গিলাতলা আদর্শ যুব পর্ষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা।
নৌকা বাইচ এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিযোগিতা। গিলাতলা বাজারঘাট সংলগ্ন ভৈরব নদী নদীর দু’ধারে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে আগামী ২৫ নভেম্বর এই নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হবে। গিলাতলার এ নৌকা বাইচ ঘিরে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দেশের দুর-দুরান্ত থেকে প্রতিযোগিরা তাদের নৌকা নিয়ে বাইচে অংশগ্রহণ করবে।নৌকা বাইচ দেখতে নদীর দু’ধারে প্রায় ৩ কিলোমিটার জায়গা জুরে ব্যাপক জনসমাগম হয়।
এ বছর বাইচে যশোরের বসুন্দিয়ার জগন্নাথপুরের আল্লাহর দান, নড়াইল এর লোহাগড়ার কালিশংকর পুরের বাংলার বাঘ, গোপালগজ্ঞের মোকসেদ পুরের সোনারতরী ও ভাই ভাই জলপড়ি এবং খুলনার ঘোষগাতি এলাকা থেকে সোনার বাংলা নামে মোট ৫ টি দল বাইচে অংশগ্রহন করবে । নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপলক্ষে গঠিত প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব খান আঃ হালিম জানান , আয়োজন প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রতিবারের মতো এবারও ১ নং আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন ও ৮ নং সিদ্দিপাশা ইউনিয়নবাসির সার্বিক তত্ত্বাবাধয়নে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ২৫ নভেম্বর বেলা ২ টায় এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া একই দিনে সন্ধায় জারিগান পরিবেশন করবেন শিল্পি অধ্যক্ষ রওশন বয়াতী বনাম বয়াতী বেবী খাতুন। ২ দিন ব্যাপি অনুষ্ঠানের ২য় দিনে ২৬ নভেম্বর শনিবার সকাল ৯ টায় অনুষ্ঠিত হবে ৮ দলীয় হা-ডু-ডু প্রতিযোগীতা সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান রাত ৮ টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (নাটিকা ও কৌতুক অভিনয়) করবেন জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা কাজল।
গিলাতলা আদর্শ যুব পর্ষদের উদ্যোগে ২ দিনের এ প্রতিযোগিতার উদ্ভোধন করবেন ফুলতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন । প্রধান অতিথি থাকবেন কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( এ এ্যান্ড ও) সরদার রকিবুল ইসলাম ( বিপি এম ) বিশেষ অতিথি থাকবেন কেএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন, ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন , হ্যামকো গ্রপের পরিচালক মোঃ কবির হোসেন তালুকদার, খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন খান। সভাপতিত্ব করবেন গিলাতলা আদর্শ যুব পর্ষদের সভাপতি মোঃ আমির হোসেন খান।
আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক শেখ মনিরুল ইসলাম নৌকাবাইচের স্মৃতিচারণ করে জানান, আবহমান বাংলার লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য নৌকাবাইচ নানা প্রতিকূলতার পথ পাড়ি দিয়ে আজ ক্লান্ত। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে মেহনতি মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা আর আনন্দের নৌকাবাইচ। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য সংরক্ষণে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।