ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভালকী গ্রামের জসিম (৩৫) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে হরিণাকুণ্ডু থানা পুলিশ। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ঘটনার বর্ণনা করেন।
তিনি জানান, কাপাশাটিয়া ইউনিয়নের ভালকী গ্রামের নবিছদ্দিনের ছেলে জসিম গত ১৭ নভেম্বর নিহত হয়। বাড়ির পাশের মেহগনি বাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার রাতেই জসিমের স্ত্রী রিতাকে (৩০) আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে রিতা স্বীকার করে সে তার প্রতিবেশী জালাল মণ্ডলের ছেলে মালেকের (৩৫) সহযোগিতায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
জসিমের স্ত্রী পুলিশকে জানায়, জসিম একাধিক পরকীয়ার সাথে জড়িত ছিলো। নিয়মিত সে শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতো। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে প্রতিবেশী মালেকের সাথে পরামর্শ করে। মালেকের সাথে নিহত জসিমের পূর্বশত্রুতা ছিলো। নিহত জসিমের পরকীয়ার ঘটনা রিতা মালেকের মাধ্যমেই জানতে পারে। তারা দুইজন মিলে হত্যাকাণ্ডের রূপ দেয়। হত্যার দিন রাতে এক গ্লাস দুধের সাথে চেতনানাষক ওষুধ মিশিয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঘুমন্ত জসিমকে মালেকের সহযোগিতায় পাশের মেহগনি বাগানে নিয়ে গিয়ে গলাই রশির ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। হত্যার পর রিতা তার নিজ গৃহে চলে যায়। মালেক হত্যায় ব্যবহৃত রশি তার বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। রিতার আটকের বিষয়ে জানতে পেরে মালেক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পলায়নকালে পুলিশ শুক্রবার সকালে মালেককেও আটক করে। তবে রিতার সাথে জসিমের কোন পরকীয়ার সম্পর্ক আছে কিনা এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জসিম দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলো। দেশে ফিরে গরুটানা গাড়ি চালানোর পাশাপাশি গরুর ব্যবসা করতো। হত্যার রাতে তার কাছে নগদ প্রায় ৩ লাখ টাকা ছিলো। সেই টাকার কোনো সন্ধান তারা পায়নি। বর্তমানে জসিমের ঘরে ৮ বছরের একটা কন্যাসন্তান রয়েছে। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে টাকাটা দ্রুত উদ্ধারের জন্য জোর দাবিও জানাই তার পরিবারের লোক।