খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান মন্দিরের উদ্বোধন ফলক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
পরে এক আলোচনা সভায় উপাচার্য বলেন, ‘সব ধর্মেই মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে। ধর্মের মূল কথাই সত্য, সুন্দর, ন্যায় ও কল্যাণ। এক স্রষ্টার কাছে সবাই আমরা যে যার ধর্ম মতে কল্যাণ চাই। পার্থিব জগতে মানব কল্যাণ, মানব সেবা মহত্তর কাজ। সকল মানুষকে এক স্রষ্টারই সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করতে পারলে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করা সম্ভব। সমাজে ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে বৃহত্তর কল্যাণ সাধিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে স্বপ্নই দেখেছিলেন বলেই সংবিধানে সে বিষয়ে মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেন। তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষা, মুক্তবুদ্ধি চর্চার পীঠস্থান। সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে এখানে এমন একটি পরিবেশ গড়ে উঠেছে যেখানে সবাই মিলে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট। গত মাসে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ উদ্বোধন হয়। আজ মন্দির উদ্বোধন হলো। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারি সবাই জ্ঞান চর্চা ও নিজ নিজ কর্তব্যের পাশাপাশি স্ব স্ব ধর্মের বিধিবিধান পালনের সুযোগ পাবেন। এর মাধ্যমে সকলের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো।’ তিনি এই মন্দির নির্মাণের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
মন্দির নির্মাণ কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. সমীর কুমার সাধুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। এছাড়া আরও বক্তৃতা করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরিফ হাসান লিমন। শিক্ষকদের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রফেসর ড. আশিষ কুমার দাস, মন্দিরের প্রধান ডিজাইনার স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক গৌরী শংকর রায়, মন্দির নির্মাণ কমিটির সদস্য-সচিব উপ-রেজিস্ট্রার কৃষ্ণ পদ দাস এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে পম্পি পাল।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন রায় ও ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের প্রভাষক সুস্মিতা পাল। বক্তারা এই মন্দির নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আন্তরিকতা, পৃষ্ঠপোষকতা, প্রচেষ্টা এবং সার্বিক সহযোগিতার বিষয় কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। এর পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেজারারের নেতৃত্বে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতাও পালন করা হয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, প্রভোস্ট, বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, এই মন্দিরের মূল ভবনের আয়তন আনুমানিক ১১০০ বর্গফুট এবং মন্দির চত্বরের আয়তন আনুমানিক ৩০০০ বর্গফুট। এই মন্দির নির্মাণে মাটি ভরাটসহ এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে আনুমানিক ৪৬ লাখ টাকা। মন্দিরের অপর ডিজাইনার স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক শিবু প্রসাদ বসু।
খুলনা গেজেট/এনএম