শাহিনুর বেগম বলেন, ২০০৩ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর পরিচালিত বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার তুলাতলা এলাকার মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সুইপার ও আয়া পদে সফলতার সাথে চাকুরী করেছি। পরে ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ‘প্রমোশন অফ জেন্ডার ইকুয়ালিটি এ্যান্ড উইমেন এম্পাওয়ারমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় গোপালগঞ্জ মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে কুক পদে কর্মরত ছিলাম। ২০১৩ সালের ১লা জুলাই থেকে তুলাতলা মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বাবুর্চী পদে আউটসোর্সিং কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করি। এখানে কাজ শুরুর পর থেকে ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত ও আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা ড. মোখলেছুর রহমান আমার সাথে নানা অন্যায় আচারণ শুরু করে। আমাকে দিয়ে তার মাথা টেপানো থেকে শুরু করে মূল দায়িত্বের বাইরে অনেক কাজ করতে বাধ্য করত। আমার স্বামীকে তালাক দেওয়ার জন্য আমাকে অনেকবার জোর করেছে। সেমিনার কক্ষে সবার সামনে আমার ও আমার স্বামী মোঃ হাফিজুর রহমানের মুঠোফোন কেড়ে নিয়েছে। ২০২১ সালের প্রথম দিকে আমাকে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিতে থাকে। রাজী না হওয়ায় আমাকে মারধর করে এবং একই বছর ৩১ ডিসেম্বর আমাকে জোরপূর্বক অন্যায়ভাবে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করে দেয়। শুধু চাকুরী থেকে বরখাস্ত করে সে থামেনি, এরপর থেকে আমার পিছনে একের পর এক লেগে আছে। বিভিন্ন সময় লোকজন দিয়ে আমাকে মারার হুমকী-ধামকী দিয়েছে। এখনও বারবার আমাকে মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে। ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রিশিয়ান আমার স্বামী মোঃ হাফিজুর রহমানকেও অন্যায়ভাবে চাকুরীচ্যুত করেছে ড. মোখলেছুর রহমান।
শহিনুর বেগম আরও বলেন, শুধু আমার সাথে নয়, ড. মোখলেছুর রহমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আসা নারী প্রশিক্ষণ্র্থী ও নারী চাকুরীজীবীদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন। বিভিন্ন সময় কয়েকজনের সাথে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তুলেছেন । জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অপরাধে তার বিরুদ্ধে বাগেরহাট আদালতে জুলেখা নামের এক নারী মামলাও করেছিল। পোল্ট্রিকর্মী মনিরা বেগম, সহকারি বাবুর্চী শিউলি বেগম, মালির স্ত্রী মাহমুদা বেগম, স্থানীয় নাজমুল হাসানও ড. মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিল মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে।
চাকুরী ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে শাহিনুর বেগম বলেন, আমার চাকুরী ফিরে পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সেই সাথে ড. মোখলেছুর রহমান আমার সাথে যে অন্যায় করেছে তার বিচার চাই।
শাহিনুর বেগমের অভিযোগ অস্বীকার করে মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত ও আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা ড. মোখলেছুর রহমান বলেন, শাহিনুর বেগম আউট সোর্সিংয়ে চাকুরী করতেন। আউট সোর্সিং কর্তৃপক্ষই তাকে চাকুরী থেকে বাদ দিয়েছে। এখানে আমার কোন ভূমিকা নেয়। এছাড়া আদালতে মামলা ও অভিযোগ গুলো আপোস মীমাংসার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/ টি আই