খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা শপথ নিয়ে র্যাগিং ও মাদককে না বললো। অপরদিকে ছাত্রবিষয়ক পরিচালক জানালেন, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) বাধ্যবাধকতায় মাদকাসক্ত এবং র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ডাটাবেজে রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। এছাড়া তাদের নামের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) যাবে। পুলিশ প্রতিপাদনেও এখন যে অপশন রাখা হয়েছে সেখানেও উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা থাকছে।
ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত সচেতন হতে হবে যাতে শিক্ষা জীবনে এসব কর্মকান্ড ও আসক্তিতে তারা সম্পৃক্ত না হয়। আজ ২২ অক্টোবর ২০২২ খ্রি. তারিখ সকাল সাড়ে ৯টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের স্নাতক সম্মান শ্রেণির ১৮ব্যাচ, মাস্টার্সের ২টি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিদায় এবং ২০ ও ২১ব্যাচের নবাগত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।
ইংরেজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ রুবেল আনছার। তিনি এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার্থীদের সাফল্যই শিক্ষকদের একান্ত কাম্য। শিক্ষার্থীরা এতো বড়ো অবস্থান তৈরি করুক বা সাফল্যে অর্জন করুক শিক্ষকরা তাদেরকে যেন মাথা উচুঁ করে তাকিয়ে দেখে। শিক্ষকদেরকে তারা যেন অতিক্রম করে যায়। তিনি তাঁর স্কুলের পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরীফ হাসান লিমন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ব্যাচ যখন শিক্ষাকোর্স সম্পন্ন করে বের হয়ে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করে তখন তারা সর্বত্র সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করে। তাই তাদের মাধ্যমে দেশ, পরিবার, শিক্ষক তথা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও সুনাম বৃদ্ধি পায়। নবাগত শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনি যেটা ভালো সেটা অনুসরণ বা অনুকরণের আহবান জানান এবং যেটা খারাপ তা ত্যাগ করা ও এর বিরুদ্ধে দাঁড়াবার আহবান জানান। তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে খারাপ সংঘের সাথে মুষ্টিমেয় শিক্ষার্থী জড়িত তারা ভালোদেরকেও খারাপ পথে টেনে নেয়। এ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন এপিএর বাধ্যবাধকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক বা র্যাগিং এর সাথে অভিযুক্তদের নাম, তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ডাটাবেজে যাবে, ইউজিসিতে যাবে। পুলিশ প্রতিপাদনেও এসব তথ্য থাকছে ফলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ পেশা জীবনে প্রবেশ করতে এসব যাতে মোকাবেলা করতে না হয় তাই তাদেরকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। তিনি মাদক ও র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের দৃঢ় অবস্থানের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আইন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাত, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ ইমদাদুল হক, প্রফেসর ড. শায়লা শারমিন স্নিগ্ধা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহবায়ক প্রফেসর মোঃ সামিউল হক। বিদায়ী ও নাবগত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শাহীন আলম, ফাতেমাতুজ জোহরা, নাফিসা বিনতে রহমান, সুমাইয়া আক্তার ইপ্তি, মিতু জোয়াদ্দার, মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম, নওসাদ হাসান নিলয়, খালিদ হাসান বাপ্পী, সাইফুল্লাহ সিদ্দীকি ও জান্নাতুল নাহার নীনা। অনুষ্ঠানে ইংরেজি ডিসিপ্লিন প্রধান নাবগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। তিনি তাঁর বক্তব্যে ইংরেজি ডিসিপ্লিনকে সবিশেষ মর্যাদার স্থানে নিয়ে যেতে সকলের সহযোগিতার কামনা করেন। পরে বিকেলে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ইংরেজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।