ভিন্ন এক পরিবেশে আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে নগরীর ডাকবাংলো চত্বরে সমাবেশ ও সড়ক ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। সমাবেশের মাইক ব্যবহারসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়ে অনুমতি মিলেছে পুলিশের কাছ থেকেও। সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হলে সরকারি দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে বহুদিন পর বাঁধাহীনভাবে বড় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি।
তবে সমাবেশের স্থান নিয়ে সমালোচনা চলছে কর্মীদের মধ্যে। বিএনপির পক্ষ থেকে গণসমাবেশে বিভাগের ১০টি জেলা থেকে লাখো মানুষ জমায়েতের কথা বলা হচ্ছে। সেইভাবে চলছে প্রস্তুতি। আয়োজক শহর খুলনার বাইরে জেলার ৯টি উপজেলায় যাচ্ছেন কেন্দ্রিয় নেতারা। কিন্তু বিশাল এই গণসমাবেশের জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে খুলনার ডাকবাংলো মোড় এলাকার সোনালী ব্যাংক চত্বরে। অর্থাৎ আপার যশোর রোডের ওপর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
দলটির পক্ষ থেকে বিশাল যে গণজমায়েত কথা বলা হচ্ছে, সেই তুলনায় স্থানটি অনেক সংকীর্ণ। ছোট জায়গা এতো বড় জমায়েত কিভাবে হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদ, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশের আয়োজন করছে বিএনপি। গত ১২ অক্টোবর প্রথম সমাবেশ হয়েছে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড ময়দানে। ১৫ অক্টোবর দ্বিতীয় সমাবেশ হয়েছে ময়মনসিংহের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রাবাসের মাঠে। তৃতীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২২ অক্টোবর খুলনায়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সেখানে বক্তব্য রাখবেন।
কিন্তু খুলনার এই সমাবেশের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে সড়কে। বড় মাঠ রেখে নগরীর সোনালী ব্যাংকের সামনের সড়কে সমাবেশ নিয়েও ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। অবশ্য খুলনার বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের হাতে বিকল্প ছিলো না।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন জানান, গণসমাবেশের জন্য হাদিস পার্ক ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে সিটি মেয়রের কাছে আবেদন করা হয়। তখন সিটি মেয়র তাদের জানান, পার্কের সামনে আওয়ামী লীগ কার্যালয়। সেখানে সমাবেশে সমস্যা তৈরি হতে পারে। বিকল্প যে কোনো স্থানে সমাবেশের আয়োজন করলে কেসিসির পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
তুহিন বলেন, দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ডাকবাংলো মোড়ে সড়কে সমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়। বিয়ষটি সিটি মেয়রকে জানালে তিনি ওই দিনই সড়ক ব্যবহারের অনুমতি দেন। ওই অনুমতি নিয়ে কেএমপিতে জমা দেওয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকেও সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় কেএমপি সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। সমাবেশ সফল করতে তারা সব ধরনের সহযোগিতার আশ^াস দিয়েছে। তারাও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করতে আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরাও সব ধরনের সহযোগিতার কথা বলেছি। আশা করছি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, ২২ অক্টোবরের সমাবেশ স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে। সেখানে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে। খুলনায় বিকল্প বড় মাঠ না থাকায় সেখানে সমাবেশ করতে হচ্ছে। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না।
এদিকে বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে সরকারি দলের বাঁধা থাকলেও খুলনায় তা’ হবে না বলে আশা করছে বিএনপি। সমাবেশের স্থান নির্বাচন এবং অনুমতির ক্ষেত্রে সিটি মেয়রের সহযোগিতামূলক মনোভাবে তারা আশ্বস্ত হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই