বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা সিএসডি’র অভ্যন্তরে ভৈরব নদীর তীরে ৭ দশমিক ৪৪ একর জায়গার উপর নির্মিত হচ্ছে আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার বা সাইলো। এ সংক্রান্ত প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ ‘শ ৫৫ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা। নির্মাণাধীন আধুনিক সংরক্ষণাগার বা স্টিল সাইলোটির ধারণক্ষমতা হবে ৭৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। AL TUNTAS-MIL Joint Venture নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গমের স্টীল সাইলো নির্মাণের কাজটি করছে। কাজের গুণগতমান তদারকির জন্য ইতিমধ্যে INOFEAR-MEPC Joint Venture নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে খাদ্য অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন খাদ্য সংরক্ষণ নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫৩ লক্ষ ৫ হাজার ৫০০ টন ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট দেশের ৮ টি অঞ্চলে এ জাতীয় ৮ টি স্টীল (৬ টি চাল ও ২ টি গম) সাইলো নির্মাণ করছে সরকার। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের W-3 প্যাকেজের আওতায় দেশের তিনটি অঞ্চলে তিনটি সাইলো নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য সরকারি পর্যায়ে কৌশলগত খাদ্য মজুদ ক্ষমতা বৃদ্ধি, খাদ্যশস্য ও বীজ সংরক্ষণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষ এবং দূর্যোগ পরবর্তী প্রয়োজন মেটাতে পারিবারিক পর্যায়ে পারিবারিক সাইলো বিতরণ, দেশে খাদ্য মজুদ পদ্ধতির উন্নয়ন, খাদ্য সংরক্ষণের ব্যয় কমানো এবং উন্নত খাদ্য মজুদ ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং চালু করা, দুর্যোগকালীন নিরাপদ খাদ্য মজুদ নিশ্চিন্তের মাধ্যমে বন্যা ও সাইক্লোনের পরে জরুরী ত্রাণ তৎপরতা নিশ্চিত করা, খাদ্যশষ্যের গুণগতমান এবং পুষ্টিগুণ বজায় রাখার লক্ষ্যে সবচেয়ে উপযুক্ত পদ্ধতির অভিযোজন এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সংহতি রেখে খাদ্য মজুদ ক্ষমতা বৃদ্ধি।
উক্ত প্রকল্পের আওতায় W-3 প্যাকেজের মধুপুর রাইস সাইলো, ময়মনসিংহের রাইস সাইলো এবং আশুগঞ্জ রাইস সাইলোর নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। একই প্রকল্পের W-21 প্যাকেজের আওতায় বরিশাল রাইস সাইলোর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। W-22 প্যাকেজের আওতায় ঢাকা রাইস সাইলোর সড়ক থেকে প্রকল্প এলাকায় প্রবেশের ব্রিজসহ সাইলোর ডিজাইনের কাজ চলমান রয়েছে, W-23 প্যাকেজের আওতায় নারায়ণগঞ্জ রাইস সাইলো নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এবং W-24 প্যাকেজের আওতায় চট্টগ্রাম গমের সাইলো নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মহেশ্বরপাশা সিএসডি’র অভ্যন্তরে গমের স্টীল সাইলো নির্মিত হচ্ছে W-25 প্যাকেজের আওতায়। ইতিমধ্যে প্রকল্প এলাকার নীচু ভূমি উন্নয়ন করে সাইলো নির্মাাণের উপযোগী করা হয়েছে। এছাড়া সাইলো এলাকায় সীমানা প্রাচীর ও একটি দ্বিতল সাইলো অফিস নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। উক্ত প্যাকেজের আওতায় গত বছরের ২৮ মার্চ উন্মুক্ত দরপত্র আহবান করা হয়। প্রাপ্ত দরপত্রগুলোর চূড়ান্ত মূল্যায়ন শেষে ক্রয় প্রস্তাব খাদ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। উক্ত প্রস্তাবটি CCGP গত বছরের ১ ডিসেম্বর অনুমোদিত হয়। উক্ত গমের সাইলো নির্মাণের জন্য AL TUNTAS- MIL JV নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি মোতাবেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর সাইলো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা।
১৬ অক্টোবর বিকালে সরজমিনে প্রকল্প এলাকায় যেয়ে প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে প্রকল্পটির প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী ওমর ফারুক এ প্রতিবেদকে বলেন, সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রকল্প সম্পর্কিত কোন তথ্য দেওয়া এবং ছবি তোলা নিষেধ রয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই