খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নির্মিত ২০১ গম্বুজ মসজিদ

এম আব্দুল্লাহ

অনেক দিন ধরেই মসজিদটি দেখার আকাঙ্খা ছিল। নান্দনিক করুকাজ আর অনিন্দ্য সুন্দর স্থাপত্য শৈলী অজ পাড়াগাঁয়ে নির্মিত একটি মসজিদকে কতটা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে পারে তা শুক্রবার পরিদর্শনে গিয়ে অনুধাবন করলাম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ বাস, মাইক্রো, মোটরসাইকেলে ছুটে যান সেখানে। বিশেষত শুক্রবার উপচে পড়া পর্যটকের ভিড়ে জনাকীর্ণ হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

ঢাকা থে‌কে বগুড়া যাওয়ার পথে গত শুক্রবার (৭ অক্টোবর) দেশ-বিদেশে সাড়াজাগানো মসজিদটি পরিদর্শনের সুযোগ হয়। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মোড় থেকে ঘাটাইলের রাস্তায় ৪০ কিলোমিটার যেতে হয় মসজিদটির দেখা পেতে। সফরসঙ্গীদের নিয়ে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুরে নির্মিত ২০১ গম্বুজ মসজিদে জুমা আদায় এবং চোখ ধাধানো স্থাপত্য শৈলী দেখে খুব ভালো লেগেছে। মসজিদ ঘিরে সেখানে দেখা যায় উৎসবের আমেজ।

মসজিদটির মূল মিনারের উচ্চতা হবে ৪৫১ ফুট (১৩৮ মিটার) যা ৫৭ তলা ভবনের সমান। ছোটবড় ২০১টি গম্বুজের মসজিদটির নির্মাণ ব্যয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা। দাবি করা হয়, নির্মাণ সম্পন্ন হলে এটি হবে বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচু মিনারের মসজিদ।

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে অবস্থিত মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি। ২০১৮ সালের শেষ দিকে এর নির্মাণকাজ শেষ হয় বলে জানানো হলেও দেখে মনে হয়েছে নির্মাণ ও সৌন্দর্য বাড়ানোর কাজ এখনও চলমান। ভিআইপি দর্শনার্থীদের জন্যে দু’টি হেলিপ্যাড রয়েছে মসজিদ প্রকল্পের আওতায়।

মসজিদটি এলাকার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে। নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। মূল অর্থায়ন রফিকুল ইসলামের হলেও পরে দেশীয় ও প্রবাসীর অনুদান এবং বর্তমানে দর্শনার্থীদের উদার সাহায্যে কাজ এগিয়ে চলেছে বলে জানালেন মসজিদের খতীব।

ডিজাইন ও কারুকার্যের দিক থেকে মসজিদটি যে কোন দর্শনার্থীকে টানবে । মসজিদের টাইলসসহ ফিটিংসের যাবতীয় শোভাবর্ধনের শৌখিন কারুকার্যখচিত পাথরগুলো বিশ্বের কয়েকটি দেশ ঘুরে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আগমন ঘটে। বিশেষ করে জুমার নামাজে শরিক হতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন।

বিশ্বের সর্বোচ্চ মিনারটি মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কায় দ্বিতীয় হাসান মসজিদে অবস্থিত। ওই মিনারের উচ্চতা ৬৮৯ ফুট (২১০ মিটার)। যা ৬০ তলা ভবনের সমান। তবে এটি ইটের তৈরি নয়। দিল্লির কুতুব মিনার বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ইটের তৈরি মিনার। এর উচ্চতা ৭৩ মিটার বা ২৪০ ফুট। ফলে ২০১ গম্বুজ মসজিদের নির্মিতব্য মিনারটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মিনারের হওয়ার দাবিটি প্রশ্নাতীত নয়।

প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর এ মসজিদ কমপ্লেক্সটি অবস্থিত। কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। এরই মাঝে নিয়মিত নামাজ হচ্ছে, প্রচুর দর্শনার্থী মসজিদটি দেখতে আসেন।

মসজিদের ছাদের মাঝখানের মূল গম্বুজটির উচ্চতা ৮১ ফুট, বাকি ২০০টি গম্বুজ ১৭ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট। মূল মসজিদের চার কোণে রয়েছে ১০১ ফুট উচ্চতার চারটি মিনার। পাশাপাশি থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার আরও চারটি মিনার।

১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতল মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে পারবেন একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি। দেয়ালের টাইলসে অঙ্কিত ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরিফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে মসজিদের দেয়ালের কোরআন শরিফ পড়তে পারবেন। মসজিদের প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০ মণ পিতল।

আজান প্রচারের জন্য মসজিদের দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হবে উঁচু মিনার। উচ্চতার হিসাবে মিনারটি প্রায় ৫৭ তলার সমান অর্থাৎ ৪৫১ ফুট হবে বলে বলা হচ্ছে। তবে সেটি এখনও পাইল পর্যায়ে। মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে পৃথক দু’টি পাঁচতলা ভবন। অজুখানাটিও নান্দনিক ডিজাইনে করা হয়েছে। জুমার দিনে মসজিদের উত্তরাংশ বিপুল সংখ্যক মহিলা কালো পর্দার আড়ালে নামাজে অংশ নেন। (ফেসবুক ওয়াল থে‌কে)




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!