বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের যে অভিযোগ, তা স্বনামধন্য অনেকের নামেই আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণমাধ্যম এসব নাম ছাপাতে পারবে কি না, সে প্রশ্নও রেখেছেন তিনি। গত ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভারত সফর নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে বুধবার সরকার প্রধান অন্যান্য নানা বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার ও ডলার সংকট নিয়েও প্রশ্নের উত্তর দেন।
অর্থ পাচার বরাবর বাংলাদেশে তুমুল আলোচিত একটি বিষয়। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়েছে।
একজন গণমাধ্যমকর্মী এ বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানিগুলো নিয়ে সরকারের নজরদারি আছে কি না তা জানতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নজরদারিতে আনা হয়েছে বলেই তো জানতে পারলেন। আপনারা খুঁজে বের করেননি তো। সাংবাদিকরা খুঁজে বের করেননি।’
অর্থ পাচার নিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকের বিষয়ে এমন তথ্য আছে, যেগুলো লিখবেন কি না সন্দেহ আছে। অনেক স্বনামধন্যের ব্যাপারেও আছে। দুদক-বাংলাদেশ ব্যাংক এসব বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে। আপনারা তখন লিখবেন কি না সেটা দেখব।’
অর্থ পাচার নিয়ে বাংলাদেশে বরাবর আলোচনায় থাকা সুইস ব্যাংকের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলেও জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘তদন্ত হচ্ছে। সুইস ব্যাংকে বহু আগে ই-মেইল পাঠিয়েছিলাম, তালিকা চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনো তালিকা আসেনি।’
অর্থ পাচার নিয়ে যে অভিযোগ আসে সেটি সুনির্দিষ্ট নয় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সবাই বলে দেয়, কিন্তু সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারে না।’ তবে ‘মানি লন্ডারিং বন্ধের নানা উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
ডলার সংকট ও রিজার্ভ কমা নিয়ে এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডলার সংকট তো বাংলাদেশের একার না। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বেই দেখা দিয়েছে।… ডলার নিয়ে কিছু খেলা হচ্ছিল। সেটা মনিটরিং হয়েছে বলে স্বস্তি আনতে পেরেছি।’
আগামী বছর বৈশ্বিক এই সংকট আরও বাড়ার আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার তো শঙ্কা হচ্ছে সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। সারা বিশ্বের অর্থনীতি চরম সংকটে পড়বে।’ বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পরামর্শও দেন সরকারপ্রধান। বলেন, ‘আমাদের মাটি আছে। উৎপাদন বাড়ালে খেয়ে-পরে বাঁচা যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো তাও চালাচ্ছি, ইংল্যান্ড, আমেরিকায়, বিশেষ করে ইংল্যান্ডের অবস্থাটা বিচার করেন।
বাংলাদেশের রিজার্ভ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আসার আগে রিজার্ভ কতটা ছিল আর এখন কতটা আছে?’ করোনার সময় রিজার্ভ বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তখন কোনো খরচ ছিল না, রিজার্ভ বেড়েছে। এরপর ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানিসহ নানা কারণে রিজার্ভ কমেছে।’
বাংলাদেশ যেখান থেকে যত ঋণ নেয়, সময়মতো পরিশোধ করে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, ‘এটা করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে টান পড়ে।’
খুলনা গেজেট/এসজেড