মহামারি করোনা নির্মূলে গত দেড় বছরে খুলনায় সাত হাজার আটশ সাতাশি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন অপচয় হয়েছে। অপচয়ের তালিকার শীর্ষে রয়েছে মর্ডানার ভ্যাকসিন। এ প্রতিষ্ঠানের অপচয়কৃত ভ্যাকসিনের পরিমাণ তিন হাজার ত্রিশ ডোজ। প্রতিটি এ্যামপুলের দশ ডোজ সম্পূর্ণ ব্যবহার না হওয়াই অপচয়ের কারণ। জেলায় এক লাখ চুয়াল্লিশ হাজার নয়’শ পঁচাশি ডোজ বিভিন্ন ধরণের ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে। তার মধ্যে সিনোভ্যাক্সের মেয়াদ ২৬ অক্টোবর শেষ হবে।
কোভিড-১৯ দেখা দেওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলবর্তী জেলা খুলনায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসার জন্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ে। ডায়াবেটিক হাসপাতালটিকে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। শুরু থেকেই মৃত্যু বাড়তে থাকে। ২০১৯ থেকে এ বছরের জুলাই পর্যন্ত জেলায় ৩২ হাজার ৪শ’৪৯ জন রোগী করোনা আক্রান্ত বলে সনাক্ত করা হয়। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছ ৮শ’৭ জনের। আতংক ছড়িয়ে পড়ার পর করোনা নির্মূলে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়। প্রথমে ভারতীয় এ্যাস্ট্রাজেনেকা নামক ভ্যাকসিনের মধ্য দিয়ে খুলনায় এর কার্যক্রম শুরু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সুত্র বলছে, শুরু থেকে এ পর্যন্ত এ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই হাজার তিনশ নিরানব্ববই ডোজ, সিনোফার্মার দুই হাজার পয়ত্রিশ ডোজ, মর্ডানার তিন হাজার ত্রিশ ডোজ, ফাইজারের একশ ৬৬ ডোজ, শিশুদের ক্ষেত্রে সিনোভ্যাক্স ১৭ ডোজ এবং ফাইজার (শিশু) ২শ চল্লিশ ডোজ নষ্ট হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্মা, মর্ডাণা, ফাইজার, জনসন, সিনোভ্যাক্স ও ফাইজার (শিশু) এর ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে।
সূত্র বলছে, সিনোভ্যাক্সের মেয়াদ এবছরের ২৬ অক্টোবর, ফাইজারের মেয়াদ ৩০ নভেম্বর, এ্যাস্ট্রাজেনেকা ও জনসনের মেয়াদ ৭ ডিসেম্বর ও সিনোফার্মার মেয়াদ আগামী বছরের ২৪ অক্টোবর শেষ হবে। জেলার ৯ উপজেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্র, নগর স্বাস্থ্য ভবন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আবু নাসের হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, তালতলা হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালে ভ্যাকসিন দেয়া কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলার মোট জনসংখ্যার মধ্যে এ পর্যন্ত ৭৯ শতাংশ ১ম ডোজ, ৭১ শতাংশ ২য় ডোজ ও ৩৬ শতাংশ বুস্টার ডোজ গ্রহণ করে।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ মঞ্জুরুল মোর্শেদ এ প্রতিবেদকে জানান, জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ভ্যাকসিন মজুদ রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে অপচয়ের সুযোগ কম। তিনি বলেন, একটি এ্যামপুলে ১০ ডোজ থাকে। ক্ষেত্র বিশেষ ৮জন গ্রহণ করেন। অনেক ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন গ্রহণকারি না আসাতে প্রতিটি এ্যামপুল থেকে দু’ডোজ করে অপচয় হয়েছে। অন্য কোন উপায়ে অপচয়ের সুযোগ নেই। তিনি তথ্য দিয়েছেন খুলনা বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিন হাজার দু’শ ৬২ জনের মৃত্যু হয়। এপর্যন্ত আক্তান্ত হয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ২৮ জন।