বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হচ্ছে লবনাক্ত উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার কয়রা উপজেলায় সদর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের ভূমিহীন গুচ্ছ গ্রাম প্রকল্প-২ এর বাসিন্দারা। তবে তাদের অভিযোগ অপরিকল্পিতভাবে কপোতাক্ষ নদীর চরে গুচ্ছ গ্রাম তৈরি করায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে তাদের সবজি বাগান। গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি স্থানীয় প্রশাসন বাউন্ডারি বাঁধ নির্মাণ করে লোনা পানি আটকিয়ে এবং কৃষি অফিস সহযোগিতা করলে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হবেন তারা।
গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা মোছাঃ ছালেয়া খাতুন তিন বছর ধরে গুচ্ছ গ্রামে বসবাস করছেন। পরিবারের আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছতা থাকায় বাড়ির আঙিনায় মৌসুম ভিত্তিক সবজি চাষ শুরু করেন। পরিবারের তিন সদস্যের খাবারের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারে সবজি বিক্রি করে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছলতা ফিরেছে তার। সেই সাথে বিভিন্ন জাতের ফলাদি গাছ ও লাগিয়েছেন।
ইলা বিবি তারা স্বামী স্ত্রীর দুই জনের সংসার। তিনি বিভিন্ন জাতের ফলাদি গাছ লাগিয়েছেন। সেগুলো অনেক বড় হয়েছে। ফলাদি বৃক্ষের মাঝে বিভিন্ন মৌসুমের সবজি লাগিয়ে তাদের দুই সদস্যের সারা বছরের সবজির চাহিদা মেটান।
ময়না বিবি বলেন, তিনি ভেন্ডি, পল্লা, ঝিঙে, করলা, কচুর মুখি ও পুঁইশাক লাগিয়েছিলেন। মৌসুম ভিত্তিক সবজি চাষ করে চার সদস্য পরিবারের চাহিদা মিটান। কিন্তু অপরিকল্পিত ভাবে নদীর চরে গুচ্ছ গ্রাম তৈরি করায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করে তার সবজি বাগান মারা যাচ্ছে।
স্বামী পরিতাক্তা তাহমিন বিবি, দুই বছর গুচ্ছ গ্রামে বাসবাস করেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে চলে তার সংসার। অবসর সময়ে সবজি চাষ করে এক সদস্য পরিবারে মৌসুম ভিত্তিক সবজি লাগিয়ে তার নিজের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তবে তার দাবি কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে আর্থিক ভাবে আর লাভোবান হবেন।
লাভলি পারভিন তিন বছর ধরে গুচ্ছ গ্রামে বসবাস করেন। চার সদস্যের পরিবারে ভ্যান চালক স্বামীর সংসার চালানো অনেক কঠিন হয়ে যায়। তিনি বাড়ির আঙিনায় ভেন্ডি, কচু, ঝিঙে,লাউ লাগিয়েছে। তার আঙিনায় লাগানো সবজি থেকে বছরের সবজি কেনা লাগেনা।
দিন মজুর আরাফাত হোসেন তিন বছর ধরে গুচ্ছ গ্রামে বসবাস করেন। তিনি দুই বছর তার বাড়ির আঙিনায় মৌসুম ভিত্তিক সবজি চাষ করে পরিবারের দশ সদস্যের বছরের সবজির চাহিদা মেটান। সেই সাথে ফলাদি বৃক্ষ লাগিয়েন। অনেক ফলাদি বৃক্ষ থেকে ফলও পাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, কৃষি অফিসের মাধ্যমে গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়ির আঙিনায় পুষ্টি বাগান প্রকল্পের আওতায় বিনা মূল্যে বীজ দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাবস্থা করা হবে। তিনি আর বলেন লোনা পানিতে যাতে তাদের সবজি বাগান নষ্ট না হয় সে জন্য টিয়ার কাবিখা প্রকল্প দিয়ে বাউন্ডারি বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
খুলনা গেজেট / টি আই