থাইল্যান্ডে কিছু দিন থেকে চলতে থাকা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ প্রকট রূপ নিতে শুরু করেছে। এবার বিক্ষোভ শুধু থাই সরকারের বিরুদ্ধেই নয়, থাই রাজার বিরুদ্ধেও আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিয়েছেন। রাজধানী ব্যাংককে গতকাল সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে হাজার হাজার লোক সমবেত হন। আয়োজকরা বলছেন, এতদিন চলতে থাকা বিক্ষোভে এটিই সবচেয়ে বড় জমায়েত।
সম্প্রতি থাইল্যান্ডে ধারাবাহিকভাবেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। এর মধ্যে কিছু বিক্ষোভকারী দেশটির রাজার অপসারণও চাইছেন। যদিও থাইল্যান্ডে রাজার বিরুদ্ধে কথা বলার সাংবিধানিক বিধিনিষেধ রয়েছে। শুধু তাই নয়, এ আইন অমান্য করলে দীর্ঘমেয়াদি জেল হওয়ার নিয়ম রয়েছে। এই বিক্ষোভে সাধারণত শিক্ষার্থীরাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গতকাল শনিবারের বিক্ষোভও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিক্ষোভের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে আদালত গণতন্ত্রপন্থি একটি বিরোধী দল ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর নতুন বিক্ষোভ শুরু হয়। ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টি (এফএফপি) নামের দলটি দেশটির তরুণ, প্রথমবার ভোটার হওয়াদের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চ থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে দলটি তৃতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক আসন লাভ করে। ওই নির্বাচনে জয় পায় ক্ষমতাসীন সাবেক সামরিক নেতাদের নেতৃত্বাধীন দলটি।
বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল আয়োজকরা থাই রাজপ্রাসাদের কাছেই একটি পার্ক প্রতীকীভাবে দখল করার পরিকল্পনা করেছে। এই পার্কটি রাজকীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। এ আগে গত মাসে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ১০ হাজার লোক সমবেত হয়েছিল। সেটি পুলিশও স্বীকার করে নিয়েছিল। গতকাল বিক্ষোভ তার চেয়েও বড় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা ২০১৪ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসেন। এর পর গত বছর তিনি বিতর্কিত নির্বাচনে জয়লাভ করেন। চলতি বছর জুন মাসে কম্বোডিয়ায় নির্বাসিত গণতন্ত্রপন্থি নেতা ওয়ানচালেরাম সাতাসাকসিত নিখোঁজ হন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ ওই নিখোঁজ ঘটনার পেছনে বর্তমান থাই সরকারের হাত রয়েছে। এর পরই আন্দোলনের নতুন মাত্রা যায়। তবে দেশটির পুলিশ ও সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এসব ঘটনার জেরে জুলাই মাস থেকে থাইল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে নিয়মিত বিক্ষোভ চলছে।
খুলনা গেজেট/এআইএন