জল্পনা কল্পনা ও গুজবের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে খুলনাবাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশিত ভৈরব সেতুর দিঘলিয়া প্রান্তের ভূমি হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে।
সেতুর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার ১৫ মাস পর ভূমি অধিগ্রহণের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ হুকুম দখল আইন ২০১৭ (২০১৭সনের ২১ নং আইন) এর ৮ ধারার (৩) (ক) উপধারা মোতাবেক সেতুর দিঘলিয়া প্রান্তে ৪ শতাধিক ভূমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের নোটিশ প্রদান করা হয়।
আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনা জেলা প্রশাসকের পক্ষে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল মামুন সেতুর তদারকি সংস্থা খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমানের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩ নং দেবনগর মৌজার মালিকানাধীন ৯ দশমিক ২৮৯২ একর ভূমি এবং ১৪ নং দিঘলিয়া মৌজার মালিকানাধীন ১ দশমিক ০৮৬৮ একর সর্বমোট ১০ দশমিক ৩৭৪ একর ভূমির কাগজপত্র হস্তান্তর করেন।
বেলা ১১ টায় দিঘলিয়ার দেয়াড়া ইউনাইটেড ক্লাব মাঠে সেতুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন (লিঃ) (করিম গ্রুপ) এর স্টক ইয়ার্ড প্লাস বেসক্যাম্পে অনুষ্ঠিত এ ভূমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে টেলিফোনে সংযুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহাবুবুল আলম, অর্থনৈতিক উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আলী রেজা বাচা, ভৈরব সেতুর কনসালটেন্ট ফার্মের টীম লিডার প্রকৌশলী রইস উদ্দিন, কনসালটেন্ট প্রকৌশলী কমলেন্দু মজুমদার, টিমের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আঃ আজিজ, খুলনা সওজ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হাবিবুর রহমান, ভৈরব সেতুর প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী এস এম নাজমুল, প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মাহবুবুর রহমান, মিজানুর রহমান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রসেস সার্ভেয়ার মোঃ মোতালেব হোসেন, খুলনা সওজ এর সার্ভেয়ার মোঃ নাইমুল ইসলাম প্রমুখ।
২০২১ সালের ২৪ মে ভৈরব সেতুর নির্মাণ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে সেতুর কাজ প্রায় থমকে গিয়েছিল। ১৫ মাসে কাজের অগ্রগতি বলতে সেতুর পূর্ব সাইড দিঘলিয়ার দেয়াড়া ইউনাইটেড ক্লাব সংলগ্ন সরকারি খাস জমির উপর ২৪ এবং ২৫ নং পিলারের কাজ চলমান এবং সেতুর পশ্চিম সাইড নদীর তীর সংলগ্ন সরকারি খাস জমির উপর ১৩ এবং ১৪ নং পিলারের কাজ চলমান রয়েছে। যা সেতুর মোট কাজের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। কার্যাদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের ২৭ নভেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
এ প্রসঙ্গে খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ খুলনা গেজেটকে বলেন, জেলা প্রশাসকের আন্তরিকতার ফলে আজ আমরা সেতুর দিঘলিয়া প্রান্তের ভূমি অধিগ্রহণের কাগজপত্র বুঝে পেলাম। এখন থেকে সেতুর কাজের গতি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। আশা করি বর্ধিত সময় আগামী দেড় বছরের মধ্যে খুলনাবাসীর প্রত্যাশিত ভৈরব সেতুর কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুর পশ্চিম সাইড রেলিগেট থেকে মুহাসিন মোড় পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ প্রান্তের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।