সাবেক নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার মারা গেছেন। বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে ডা. আইরিন মাহবুব।
তিনি বলেন, বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, তিনি ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর বেলা ১টার দিকে তিনি মারা যান।
নির্বাচন কমিশনে বিভিন্ন সময়ে আলোচিত মাহবুব তালুকদার দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন।
মাহবুব তালুকদারের তিন সন্তান। তার বড় মেয়ে আইরিন মাহবু্ব বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকেন। বাকি দুই সন্তানের একজন কানাডায় ও একজন আমেরিকায় থাকেন।
মাহবুব তালুকদার তার চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লিখেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও লিখেছেন গুরুত্বপূর্ণ বই। তার পরিচিতি শুধু সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনারই নয়, তিনি বাংলা ভাষার একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখকও। কবিতা, গল্প, উপন্যস, স্মৃতিকথা, ভ্রমণকাহিনি মিলিয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৪০। তিনি ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মাহবুব তালুকদার ১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায়। তিনি ঢাকা নবাবপুর হাইস্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। পরে তিনি ঢাকা জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ও মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের চাকরিতে যোগ দেন। এ সময় তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাকে উপসচিবের পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির স্পেশাল অফিসার নিযুক্ত করেন। রাষ্ট্রপতি মুহম্মদ উল্লাহর জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর মাহবুব তালুকদার তার সহকারী প্রেস সচিবের (উপসচিব) দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাকে তদানীন্তন ক্যাডার সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরে বিসিএস প্রশাসন হিসেবে রূপান্তরিত হয়। একসময়ে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। চাকরিজীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ে অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয়।
খুলনা গেজেট/এমএনএস