আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমেও ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কত আসনে এই পদ্ধতিতে ভোট হবে, সেটি চূড়ান্ত না করলেও সংখ্যাটি দেড় শর বেশি হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইভিএম নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও সমমনাদের, এমনকি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টির আপত্তির মুখে এমন সিদ্ধান্ত হলো।
মঙ্গলবার কমিশনের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তবে ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট নেয়া নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কঠিন। তারা বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখেছে, যদি নতুন মেশিন কেনা না হয়, তাহলে ১০০ আসনে ভোট করাই সমস্যা সংকুল হয়ে যায়। ৮০টির মতো আসনে ইভিএমে ভোট করার সক্ষমতা আছে।
দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট নিতে হলে কমিশনকে নতুন মেশিন কিনতে হবে।
বাংলাদেশের বিবদমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় ভোটে ইভিএম ব্যবহার নিয়েও আছে বিভক্তি। আওয়ামী লীগ এবং সমমনারা ইভিএম চাইলেও বিএনপি এবং সমমনারা এর ঘোর বিরোধী।
ইভিএমে ভোট করা নিয়ে গত জুনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মত নেয় নির্বাচন কমিশন। এই সংলাপ অবশ্য বিএনপি ও তার জোটের শরিকরা বর্জন করেছে। যারা আলোচনায় অংশ নিয়েছে, তাদের মধ্যে অর্ধেক এই যন্ত্র ব্যবহারের কথা বলেছে, বাকি অর্ধেক দল বলেছে এই যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত হবে না।
অন্যদিকে বিএনপি ও তার জোটের শরিকদের অবস্থান হলো, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে তারা কোনো ভোটে অংশ নেবে না। তারা ইভিএম ব্যবহারেরও ঘোর বিরোধী। সেই হিসাবে ইভিএমের বিরোধিতাকারীর সংখ্যাই বেশি।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘কমিশন ডিসিশন নিয়েছে যে অনূর্ধ্ব ১৫০ টি আসনে ইলকট্রনিক ভোটিং মেশিন নির্বাচন করবেন। অন্যান্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে।’
নূন্যতম কত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একটাও হতে পারে।’
কোন ১৫০ আসন ইভিএমে ভোট হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটা সিডিউল ঘোষণার পরে বলা যাবে। এই মুহূর্তে বলা যাবে না।’
বর্তমানে যে ইভিএম আছে তা দিয়ে ১৫০ আসনে ভোট করা সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তো ১৫০ আসনে বলি নাই। অনূর্ধ্ব ১৫০।’
ইভিএম কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কমিশন সিদ্ধান্ত দিলে সেই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেব। প্রকিউরমেন্ট করব।’
ইভিএম ব্যবহারে রাজনৈতিক দলের পরামর্শ আমলে নেয়া হয়েছে কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কমিশন সকল বিষয় আমলে নিয়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
বর্তমানে কমিশনের কাছে ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৭০ থেকে ৭৫ আসনে ভোট করা যাবে। তবে আসনসংখ্যা নির্ভর করে ভোটার সংখ্যার উপর। ছোট আসন হলো ভোটার কম হবে সেক্ষেত্রে ইভিএম কম হবে। বেশি ভোটার হলে ইভিএম বেশি লাগবে।
‘যদি আরও ইভিএম লাগে সেক্ষেত্রে আমরা প্রকিউরমেন্টে যাব। আরও আসনে ইভিএম করতে গেলে আমাদের প্রকিউরমেন্ট করতে হবে। সে পদক্ষেপ অলরেডি উদ্যোগ নেব এখন থেকে। প্রয়োজন হলে নতুন প্রকল্প নেব।’